কয়লার অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও ব্যবহার ?

0
কয়লার অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশ্নটি তারা অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই পরীক্ষায় ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। কয়লার অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও ব্যবহার এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

কয়লার অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো ?

কয়লার ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব:

অষ্টাদশ শতকে শিল্প বিল্পবের পর থেকে বর্তমান সময়ে কয়লার ব্যবহার এত ব্যাপক, বিবিধ ও বিচিত্র যে এর প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করা প্রায় অসম্ভব । কয়লা হল বহু উদ্দেশ্যসাধক খনিজ দ্রব্য। শিল্প বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এর গুরুত্ব ও ব্যবহার উভয়ই দ্রুত বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে কয়লার প্রধান ব্যবহারগুলি হল

  1. বাষ্পশক্তি উৎপাদন (Steam Power): অষ্টাদশ শতাব্দীতে জেমস ওয়াট কর্তৃক স্টিম ইঞ্জিন আবিষ্কারের পর কয়লার ব্যবহার বহুলাংশে বেড়ে যায়। কয়লা পুড়িয়ে জলকে বাষ্পশক্তিতে পরিণত করে রেলগাড়ি, জাহাজ, স্টিমার প্রভৃতি চালানো হয়।
  2. বিদ্যুৎ উৎপাদন (Thermal Power): পৃথিবীর মোট তাপ ও শক্তি উৎপাদনে 55%-60% উৎপাদিত হয় কয়লা পুড়িয়ে। ভারতে মোট উৎপাদিত কয়লার প্রায় 50% তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়।
  3. লৌহ ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল (Raw Material Of Iron And Steel Industry): আকরিক লোহা থেকে পিন্ড লোহা ও ইস্পাত তৈরির জন্য কোক কয়লা (উন্নতমানের কয়লা) ব্যবহার করা হয়। ভারতে 5.5% করলা লৌহ-ইস্পাত শিল্পে ব্যবহৃত হত।
  4. রাসায়নিক শিল্পে (Chemical Industry): কয়লা থেকে যেসব উপজাত দ্রব্য পাওয়া যায় তার মাধ্যমে অ্যামোনিয়া থেকে বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক সার, বেনজল থেকে রঞ্জক দ্রব্য, ক্রিয়োজোট, ন্যাপথলিন প্রভৃতি থেকে কীটনাশক, অ্যান্টিসেপটিক প্রভৃতি দ্রব্য তৈরি করা হয়। ভারতে 44% কয়লা সিমেন্ট ও সার উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হয়।
  5. কোল গ্যাস (Coal Gas) প্রস্তুতিতে: কয়লা থেকে যে গ্যাস তৈরি হয় তাকে কোল গ্যাস বলে। কোল গ্যাস কলকারখানা চালানো ও বাতি জ্বালানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।
  6. গৃহস্থালির জ্বালানি ( Domestic Fuel): রান্নার জ্বালানি এবং শীতপ্রধান দেশে ঘর গরম রাখার জন্য নিকৃষ্টমানের কয়লা ব্যবহার করা হয়।
  7. খনিজ তেল (Mineral Oil): কয়লা কার্বন ও হাইড্রোকার্বনে গঠিত। হাইড্রোজেনের সঙ্গে সংশ্লেষণ করে কয়লাকে খনিজ তেলে রূপান্তরিত করা হয়।
  8. উপজাত দ্রব্যের ব্যবহার: কয়লার অধিকাংশ উপজাত দ্রব্য রাসায়নিক শিল্পের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

যেমন-

  • অ্যামোনিয়া সালফেট: সার, হিমায়তকরণ, বিস্ফোরক দ্রব্য, কীটনাশক দ্রব্য ।
  • টলুইন: বিস্ফোরক দ্রব্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
  • স্যাকারিন: চিনির বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
  • বেঙ্গল: মোটর গাড়ির উচ্চমানের জ্বালানি, কীটনাশক, ছত্রাকনাশক ওষুধ তৈরির কাজে লাগে।
  • পাইরিডিন: রং, কৃত্রিম রবার তৈরির কাজে লাগে ।
  • ন্যাপথালিন, অ্যানথ্রাসিন ও ক্রিয়োজোট: কীটনাশক, রঞ্জক, ওষুধ, আঠা, সুগন্ধি, কৃত্রিমতত্ত্ব, পচননিবারক, সংক্রামক নিবারক, সলভেন্ট, প্লাস্টিক, ডিটারজেন্ট, তরল জ্বালনি প্রভৃতি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
  • ফেনল: কীটনাশক, ওষুধ, পচন নিবারক তৈরি হয়।
  • কোল গ্যাস: যন্ত্রপাতি চালানো, রান্না, বাতি জ্বালানোর কাজে লাগে।
  • পিচ বা অ্যাসফল্ট: পাকা সড়ক নির্মাণে দরকার হয়।
  • স্ল্যাগ ও ছাই: সিমেন্ট, ইঁট প্রভৃতি তৈরির কাজে বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। প্রশ্নের বিষয়টি নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য বা পরে অধ্যায়ন করার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।