মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ু, মৃত্তিকা ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?

পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ু, মৃত্তিকা ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?

0
পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ু, মৃত্তিকা ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি তারা অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ু, মৃত্তিকা ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ু:

অবস্থান: পশ্চিমে সমগ্র পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, বর্ধমান, বীরভূম ও বাঁকুড়া জেলার পশ্চিম অংশ পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের অন্তর্গত।

জলবায়ুর প্রকৃতি: পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ু অনেকটা চরমভাবাপন্ন প্রকৃতির। সমুদ্র থেকে দূরে, মালভূমির অন্তর্গত এবং ল্যাটেরাইট মৃত্তিকার দ্বারা গঠিত হওয়ায় পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ু কিছুটা চরমভাবাপন্ন প্রকৃতির।

জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য:

  1. জলবায়ুর প্রকৃতি: উপকূল থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান করায় এবং মালভূমির অন্তর্গত হওয়ায় এই অঞ্চলের জলবায়ু তুলনামূলকভাদ্ভেব চরমভাবাপন্ন প্রকৃতির অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে অধিক উয় এবং শীতকালে তুলনামূলকভাবে উন্নতা বেশ খানিকটা কম হয়ে থাকে।
  2. তাপমাত্রা: মালভূমি অঞ্চলে গড় উয়তা থাকে 27°-32° সেন্টিগ্রেড। গ্রীষ্মর দুপুরে উদ্ভূতা 45° সেঃ পর্যন্ত ওঠে। শীতকালে গড় উষ্ণতা হয় 15°-20° সেঃ।
  3. উষ্ণতার প্রসার: পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি অঞ্চলে শীত ও গ্রীষ্মকালে দিন ও রাতের উষ্ণতার প্রসর খুব বেশি থাকে। প্রায় 10°-20° সেন্টিগ্রেড হয়। এজন্য এই অঞ্চলের জলবায়ু অনেকটা চরমভাবাপন্ন প্রকৃতির।
  4. আপেক্ষিক আর্দ্রতা: কেবলমাত্র বর্ষাকালে এই অঞ্চলের বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি থাকে। সারাবছর তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
  5. বৃষ্টিপাত: পশ্চিমবঙ্গের এই অঞ্চলে সবচেয়ে কম বৃষ্টিগাত হয়। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত ঘটলেও গড় বৃষ্টিপাত বেশ কম 100-125 সেঃ। এটাই পশ্চিমবঙ্গের শুষ্কতম প্রকৃতির জলবায়ু।
  6. বায়ুপ্রবাহ: গ্রীষ্মের মধ্যাহ্নে মাঝে মাঝে গরমবায়ু ‘লু’ প্রবাহিত হয়। গ্রীষ্মকালে প্রায়শই অপরাহ্নে ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি সহ কালবৈশাখী ঝড় হতে দেখা যায় ।

মালভূমি অঞ্চলের মৃত্তিকা:

পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের লালচে বাদামী ল্যাটেরাইট মাটি।

অবস্থান: পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলার পশ্চিমাংশে 156 মিটারের অধিক উচ্চতা বিশিষ্ট অংশে এই প্রকার মাটি দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের স্বাভাবিক উদ্ভিদ : পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও বর্ধমান জেলার মালভূমি অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম ও মাটি কাঁকরময় হওয়ার দরুন এই অঞ্চলে এক গভীর অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে যা ক্রান্তীয় অঞ্চলের পাতাঝরা বা পর্ণমোচী বৃক্ষের অরণ্য নামে পরিচিত।

পর্ণমোচী অরণ্য সৃষ্টির কারণ:

  1. মালভূমি অঞ্চলের অন্তর্গত হওয়া এখানে জনবসতি তুলনামূলকভাবে কম ফলে পতিত জমির পরিমাণ বেশি
  2. এখালে ল্যাটেরাইট প্রকৃতির মাটি হওয়ায় এবং এই মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতা কম হওয়ায় কৃষিকার্য সর্বত্র করা সম্ভব হয় না বলে বিস্তীর্ণ পতিত জমিতে অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে।
  3. মৃত্তিকা কাঁকরময় হওয়ায় ও পাথুরে হওয়ায় বনভূমি সৃষ্টিতে সুবিধা হয়েছে।
  4. বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় অরণ্য সৃষ্টি সুযোগ ঘটেছে।

প্রধান প্রধান বৃক্ষ: শাল, শিমুল, পলাশ, মহুয়া, কুল, কেন্দু, বাবলা, অর্জুন, আকাশমনি, কুসুম, শিরীষ, খয়ের, সেগুন প্রভৃতি এই অঞ্চলের অরণ্যের প্রধান বৃক্ষ ।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। বিষয়টি নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য বা পরে অধ্যায়ন করার জন্য সরাসরি পিডিএফ(PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।