বৃষ্টির জলে পুষ্ট ভাগীরথী-হুগলি নদীতে পতিত পশ্চিমবঙ্গের নদনদী ?

বৃষ্টির জলে পুষ্ট ভাগীরথী-হুগলি নদীতে পতিত পশ্চিমবঙ্গের নদনদীসমূহের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও  ?

0
বৃষ্টির জলে পুষ্ট ভাগীরথী-হুগলি নদীতে পতিত পশ্চিমবঙ্গের নদনদীসমূহের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও  ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি তারা অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। বৃষ্টির জলে পুষ্ট ভাগীরথী-হুগলি নদীতে পতিত পশ্চিমবঙ্গের নদনদী এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের ভাগীরথী-হুগলি নদীতে পতিত নদনদী/পশ্চিমাংশেণ নদনদী/বৃষ্টির জলের পুষ্ট নদনদ/পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের নদনদীসমূহ : পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের নদনদীগুলি বৃষ্টির জলে পুষ্ট এবং অধিকাংশই পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে ভাগীরথী-হুগলি নদীতে পড়েছে। নিম্নে এই অঞ্চলের প্রধান নদনদীগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া হল

  1. বাঁশলাই: এর দৈর্ঘ্য 122 কিমি। এটি ঝাড়খণ্ডের রাজমহল এলাকার বাঁশপাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে পূর্ব দিকেপ্রবাহিত হয়ে বীরভূম জেলার রামপুরহাট মহকুমার মহেশপুর স্টেশনের কাছে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে। পরে মুরারই স্টেশনের উত্তর দিক দিয়ে রেললাইন পেরিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে জঙ্গীপুরের উত্তরে ভাগীরথীতে মিশেছে। তোর্সা, কারজোর, সুখরা, ইকরি প্রভৃতি হল বাঁশলাই-এর উপনদী।
  2. পাগলা: ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সাঁওতাল পরগণার মাসিনা নামক স্থান থেকে পাগলা নদী উৎপত্তি লাভ করে মুরারাই, নন্দীগ্রাম ও হরিশপুর হয়ে জঙ্গীপুরের দক্ষিণে ভাগীরথী নদীতে পড়েছে। পাগলা নদীর দৈর্ঘ্য ৪০ কিমি। সুরি হল পাগলার উপনদী।
  3. ব্রাক্ষ্মণী: এই নদীটি ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগণা জেলার দুধুয়া পাহাড় থেকে উৎপত্তি লাভ করে বীরভূম জেলার নারায়ণপুরের কাছে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে। এরপর নদীটি বীরভূম জেলার নলহাটি, রামপুরহাট হয়ে মুর্শিদাবাদের কান্দী মহকুমার সাঁকোঘাট গ্রামের কাছে দ্বারকা নদে মিশেছে। ব্রাক্মণীর দুটি উপনদী হল ত্রিপিতা ও গামারি।
  4. দামোদর: দৈর্ঘ্য 592 কিমি এটি পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘতম নদী । টি ছোটোনাগপুর মালভূমির খামার পাত পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রথমে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়েছে। এর মোট দৈর্ঘ্য -41 কিমি। এই নদী ‘দেওনদী’ বা Deonadi নামেও পরিচিত। এই নদী রাঁচী, হাজারিবাগ, ধানবাদ এবং সাঁওতাল পরগণার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে মধুকুণ্ডা’র কাছে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় প্রবেশ করেছে। এই জেলার উত্তর অংশ দিয়ে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে দিশেরগড় কয়লাখনির নিকট বর্ধমান জেলায় প্রবেশ করেছে। এরপর বাঁকুড়া ও বর্ধমান জেলার সীমানা বরাবর প্রবাহিত হয়ে শক্তিগড়ের কাছে চাঁচাই গ্রামে পৌঁছে বর্ধমান জেলা ত্যাগ করে হুগলি ও হাওড়া জেলায় প্রবেশ করেছে। সর্বশেষে হাওড়া জেলার গড় চমুক গ্রাম পেরিয়ে শিবগঞ্জত গ্রামের নিকট দামোদর হুগলী নদীতে পড়েছে। আয়ার, বোকারো, কোনার, বরাকর প্রভৃতি হল দামোদরের প্রধান উপনদী। মুণ্ডেশ্বরী ও কানা দামোদর বা কৌশিকী হল দামোদরের শাখানদী।
  5. দ্বারকেশ্বর: পুরুলিয়া মালভূমি অঞ্চলে হুড়া গ্রামের একটি বড় ঝিল থেকে দ্বারকেশ্বর নদীর উৎপত্তি। এরপর নদীটি বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, আরামবাগ হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালের কাছে শিলাবতী নদীর সাথে মিশেছে। ছাতনার কাছে কুমাসি এবং বাঁকুড়া শহরের কাছে গন্ধেশ্বরী নদী দ্বারকেশ্বরে মিলিত হয়েছে। বিড়াই, আড়কুশা, হোরিংপুর প্রভৃতি হল দ্বারশ্বেরের অন্যান্য উপনদী।
  6. শিলাবতী: পুরুলিয়া জেলার পুতো শহরের কাছ থেকে উৎপন্ন হয়ে শিলাবতী বা শিলাই নদী বনভূমির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বেঁকে ইন্দপুর, খাতরা এবং সিমলিপাল হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রবেশ করেছে। ঘাটালের কাছে শিলাবতী দ্বারকেশ্বরে পড়েছে। জয়পাণ্ডা, পুরন্দর, তমাল, পারাং প্রভৃতি হল শিলাবতীর উপনদী সমূহ।
  7. রূপনারায়ণ: শিলাবতী ও দ্বারকেশ্বরের মিলিত প্রবাহের নাম রূপনারায়ণ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে শিলাবতী ও দ্বারকেশ্বর মিলিত হয়েছে। এরপর দক্ষিণ পূর্বে প্রবাহিত হয়ে কোলাঘাট ছাড়িয়ে গেঁওখালি ও গাদিয়াড়ার কাছে রূপনারায়ণ হুগলি নদীর সঙ্গে মিশেছে।
  8. কংসাবতী নদী (336 কিমি): কংসাবতীকে স্থানীয় ভাষায় কাঁসাই বলে। কাঁসাই ও কালিয়াঘাই-এর মিলিত প্রবাহ হলদি নাম নিয়ে হুগলি নদীতে মিশেছে।
  9. সুবর্ণরেখা নদী: ছোটোনাগপুর মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে পশ্চিমবঙ্গে সামান্য প্রবাহিত হয়ে ওড়িশার মধ্য দিয়ে অবশেষে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।

বৈশিষ্ট্য:

অধিকাংশ নদীই ছোটোনাগপুর মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়েছে, নদীগুলি বৃষ্টির জল পুষ্ট বলে চিরপ্রবাহী নয়, নদীগুলি বন্যাপ্রবণ, নদীগুলি পূর্ববাহিনী, নদীগুলি খরস্রোতা বলে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন উপযোগী।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। বিষয়টি নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য বা পরে অধ্যায়ন করার জন্য সরাসরি পিডিএফ(PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।