তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সংক্ষিপ্ত পরিচয় ?

0
পশ্চিমবঙ্গের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি তারা অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সংক্ষিপ্ত পরিচয় এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প:

1991 সালে মুক্ত বাজার অর্থনীতি এবং 1994 সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিল্পনীতি গৃহীত হওয়ার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে তথ্য প্রযুক্তি শিল্পে জোয়ার শুরু হয়। কম্পিউটার হার্ডওয়ার, সফটওয়ার, ইলেকট্রনিকস, ইন্টারনেট, টেলিকম সরঞ্জাম, ই-কমার্স, প্রভৃতি বিষয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে ওতপ্রতোভাবে যুক্ত। পশ্চিমবঙ্গে তথ্য প্রযুক্তির মূলত দুটি বিষয় রয়েছে— তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র এবং বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (BPO) = Business Process Outsource.)

প্রধান প্রধান তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র ও সংস্থা:

পশ্চিমবঙ্গের তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র মূলত কলকাতার সল্টলেক (সেক্টর – V) এবং রাজারহাট নিউটাউন অঞ্চলে গড়ে উঠেছে। এই দুটি অঞ্চলে গড়ে উঠেছে অসংখ্য আইটি হাব (IT hub) কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার পশ্চিমবঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে উন্নততর করে তুলেছে। যেমন-

  1. খুব অল্প সময়ের মধ্যে কলকাতার সল্টলেক ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স- এর সফট্ওয়্যার টেকনোলজি পার্ক – শিল্পকেন্দ্রে তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটিয়েছে। টি.সি.এস., ইনফোসিস, উইপ্রো, আই.বি.এম. সফট্ওয়্যার পরিষেবার চারটি প্রধান ভারতীয় সংস্থা ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। এই শিল্পে যে বিপুল সংখ্যক মানৰ সম্পদ দরকার তার চাহিদা মেটাতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইতিমধ্যে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তির অন্যান্য কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিগুলি হলো সি.এম.সি. লিমিটেড, ম্যাকসেট ইন্টার অ্যাকটিভ টেকনোলজিস, মিলেনিয়াম ইনফোসিস্টেম, এইচ.সি.এল.ইনফোসিস্টেম প্রভৃতি।
  2. 29 জুন 2007 সালে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রামে 25 একর জমিতে ভিডিওকনের জৈব ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের শিলান্যাস করা হয়।
  3. রাজারহাট দেশের মধ্যে একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য তথ্যপ্রযুক্তির কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাজারহাটে 41 টি ছোটো ও মাঝারি মাপের সফটওয়্যার কোম্পানিকে মাথাপিছু 25 থেকে 2 একর পর্যন্ত হিডকোর দ্বারা জমি বঞ্চিত হয়েছে। টি.সি.এস. (টাটা কন্‌সালটেন্সি সার্ভিস) তাদের ভবিষ্যৎ সম্প্রসারনের কথা মাথায় রেখে রাজারহাটে 40 একর জমি নিয়েছে। এছাড়া নামী কোম্পানি ডি.এল.এফ. ইউনিটেক প্রভৃতিকে জমি দেওয়া হয়েছে তাদের তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য।
  4. নোনাডাঙায় প্রায় 10 একর জমি বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলিকে KDMA-এর মাধ্যমে বণ্টন করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া কগনিজেন্ট, ব্রিটিশ টেলিকম, পাটনি কম্পিউটার প্রভৃতি এবং পরিকাঠামো নির্মাণকারী সংস্থাগুলিকে বানতলার তথ্যপ্রযুক্তি আর্থিক অঞ্চলে প্রায় 130 একর জমি বণ্টনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
  5. কলকাতার শরৎ বসু রোডে ও আলিপুরে সফটওয়্যার কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। এছাড়া
  6. কলাবাগানে মেডিকেল ট্রান্সক্রিপশন, ভিডিও সফট্ওয়্যার কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
  7. উত্তর 24 পরগণার লেকটাউনে কম্পিউটার সফট্ওয়্যার কেন্দ্র, হুগলির পুরুষোত্তমবাটিতে জেনাইটিস ইনফোটেক প্রাঃ লিঃ এর ইলেকট্রনিক হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি দেওয়া হয়েছে।
  8. শিলিগুড়িতে এশিয়ান গেটওয়ে লিমিটেডকে তথ্যপ্রযুক্তি স্থাপনের জন্য 200 একর জমি দেওয়া হয়েছে।
  9. খড়গপুরে এনফিল্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডকে তথ্যপ্রযুক্তি অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য 20 হেক্টর জমি প্রদান করা হয়েছে। এই কোম্পানিকে বর্ধমানের পানাগড়েও তথ্যপ্রযুক্তি অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
  10. নিউটাউনে শাপুরজী পালোনজী অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড, কলকাতায় মেসার্স এম.এল. ডালমিয়া কোম্পানি লিমিটেড তাদের তথ্য প্রযুক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে। (উপরোক্ত তথ্যগুলি ‘যোজনা’ পত্রিকা (সরকারি পত্রিকা) নভেম্বর ২০০৬-এ প্রকাশিত সংখ্যা পৃষ্ঠা – ২৩ ও ২৪-এর অনুসরণে দেওয়া হয়েছে।)

মন্তব্য:

তথ্যপ্রযুক্তির প্রধানত দুটি দিক রয়েছে। একটি হল শিল্প-বাণিজ্যের দিক অপরটি হল ই-গভর্ন্যান্স (E-Governance)। প্রথমটির সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি তেমন যোগ না থাকলেও দ্বিতীয়টির সঙ্গে আমজনতার গভীর যোগ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সল্টলেক ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্স ছাড়াও রয়েছে এস.ডি.এফ বিল্ডিং, বোল ইনটেলিজেন্স পার্ক প্রভৃতি। সল্টলেকে স্থানাভাবের কারণে রাজারহাট নিউটাউনে 10 একর জায়গায় আই.টি. পার্ক তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া দুর্গাপুরেও এস.টি.পি. খোলা হয়েছে। শিলিগুড়ি এবং হলদিয়ায় এস.টি.পি. খোলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। সফ্টওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সহায়ক পরিষেবা (ITES)। হার্ডওয়্যারের কাজ এরাজ্যে খুব বেশি হয় না। 2003-04 সালে পশ্চিমবঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প সংস্থার সংখ্যা ছিল 124টি। রপ্তানিকারী সংস্থার পরিমাণ ছিল 1211.00 কোটি টাকা এবং কর্মে নিযুক্ত কর্মচারীর সংখ্যা ছিল 9000-এর কিছু বেশি।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। বিষয়টি নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য বা পরে অধ্যায়ন করার জন্য সরাসরি পিডিএফ(PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।