ভারতে জলসেচের গুরুত্ব ?

0
ভারতে জলসেচের গুরুত্ব লেখ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা অধ্যায়ন করবো ভারতে জলসেচের গুরুত্ব বিষয়টি ছাত্রছাত্রীরা অনেক ক্ষেত্রে ব্যাবহারযোগ্য এবং তারা বিষয়টি অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব ভালো নম্বর অর্যন করতে পারবে। বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

ভারতে জলসেচের গুরুত্ব লেখ?

ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর দেশ ভারত । তাই স্বাভাবিকভাবেই ভারতে জলসেচের গুরুত্ব তাৎপর্যপূর্ণ । নিচে ভারতে জলসেচের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হল 

  • অনিশ্চিত মৌসুমি বৃষ্টিপাতঃ ভারত মৌসুমি জলবায়ুর দেশ । কিন্তু মৌসুমি বায়ুর প্রভাবাধীন অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল তা প্রত্যেকবার নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় না । পাশাপাশি প্রত্যেকবারই বৃষ্টিপাতের পরিমাণেরও তারতম্য দেখা যায় । কোনও বছর অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে যেমন বন্যার প্রকোপ দেখা যায় , তেমনই কোনও বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে খরা । তাই স্বাভাবিকভাবেই কৃষি প্রয়োজনে বৃষ্টিপাতের বিকল্প হিসাবে জলসেচ অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায় ।
  • বৃষ্টিপাতের অসম বণ্টনঃ ভারতবর্ষের প্রায় ৮০ % বৃষ্টিপাত মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সংঘটিত হলেও ভারতের সর্বত্র এই বৃষ্টিপাতের বন্টনের পরিমাণ সমান নয় । উত্তর পশ্চিম ভারত ও দাক্ষিণাত্য মালভূমির মধ্যভাগে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ খুবই কম । যে কারণে এই সকল কম বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে কৃষিকাজের জন্য জলসেচ অত্যন্ত প্রয়ােজনীয় হয়ে পড়েছে ।
  • শীতকালীন বৃষ্টিপাতের অভাবঃ আর্দ্র গ্রীষ্মকাল ও শুষ্ক শীতকাল ভারতের জলবায়ুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য । কেবলমাত্র উত্তর পশ্চিমে ভারতের কিছু অংশ ও তামিলনাড়ুর করমণ্ডল উপকূল ছাড়া সারা ভারতের আর কোথাও তেমন উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয় না । তাই শীতকালীন রবিশস্য চাষ করার জন্য জলসেচের প্রয়ােজন অপরিহার্য হয়ে থাকে । 
  • মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতাঃ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের মৃত্তিকা দেখা যায় । এই ভিন্ন ভিন্ন মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতাও ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির । এঁটেল মাটির জলধারণ ক্ষমতা বেশি হলেও লােহিত মৃত্তিকা , ল্যাটেরাইট মৃত্তিকা , দোআঁশ মৃত্তিকার জলধারণ ক্ষমতা কম । এই সব কম জলধারণ ক্ষমতাযুক্ত মৃত্তিকায় কৃষিকাজ করার জন্য জলসেচ অত্যন্ত প্রয়ােজন হয়ে পড়ে ।
  • উচ্চফলনশীল বীজ প্রয়োগঃ অধিক কৃষিফসল উৎপাদনের উদ্দেশ্যে বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন অংশে উচ্চফলনশীল বীজ ব্যবহার করা হয় । এইসকল উচ্চফলনশীল বীজ চাষে প্রচুর জলের প্রয়ােজন হয় , যার সিংহভাগই জলসেচ দ্বারা মেটানো হয় ।
  • বহুফসলী কৃষিঃ কৃষিফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য একই জমিতে আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে বছরে বহু ফসল ফলানাে হচ্ছে । সারা বছর জুড়ে এই বহুফসলী কৃষি পরিচালনার জন্য জলসেচের প্রয়োজন অবসম্ভাবী হয়ে পড়েছে ।
  • শস্যের জল চাহিদাঃ আঞ্চলিক ভিন্নতার কারণে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের শস্য চাষ করা হয় । গম , জোয়ার , বাজরা , রাগি প্রভৃতি ফসলের ক্ষেত্রে জলের চাহিদা যেমন কম , তেমনই আবার ধান , পাট প্রভৃতি ফসলের ক্ষেত্রে জলের চাহিদা যেমন বেশি। যে সমস্ত ফসলের ক্ষেত্রে জলের চাহিদা বেশি সেগুলির জন্য জলসেচের প্রয়ােজন আবশ্যিক হয়ে পড়ে ।
  • বাষ্পীভবনের আধিক্যঃ অত্যাধিক উষ্ণতাজনিত কারণে ভারতে বাষ্পীভবনের হার বেশি । ফলে শীত ঋতুতে ভারতের জলভাগে ( নদী , খাল , বিল , পুকুর , জলাশয় ) জলের পরিমাণ অনেক কমে যায় । এইসময় বর্ষার জলে পুষ্ট নদীগুলি প্রায় শুকিয়ে যায় বললেই চলে , যে কারণে কৃষিকার্যের জন্য জলসেচের প্রয়োজন হয়ে পড়ে ।
  • উদ্যান কৃষি পরিচালনাঃ উদ্যান কৃষি মূলত পাশ্চাত্য দেশগুলিতে প্রচলিত কৃষি ব্যবস্থা হলেও  বর্তমানে ভারতেও বিভিন্ন অঞ্চলে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিচালিত হচ্ছে । এই কৃষি পদ্ধতিতে বাজারের চাহিদা পূরণের জন্য বাণিজ্যিকভাবে সারাবছর ধরে শাকসবজি , ফল , ফুল চাষ করা হয় , যে কারণে সারাবছর ধরেই প্রচুর পরিমাণে জলসেচের প্রয়ােজন হতে থাকে ।

উপরোক্ত বিষয়টি নিয়ে কোনো বিস্ময় থাকলে নীচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি আপনার কাছে সাহায্য দায়ক মনে হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করে তাদের কেও সাহায্য করুন। বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।