পশ্চিমবঙ্গ ধান চাষে উন্নত কেন ?

0
পশ্চিমবঙ্গ ধান চাষে উন্নত কেন?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি তারা অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। পশ্চিমবঙ্গ ধান চাষে উন্নত কেন এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ ধান চাষে উন্নত কেন?

ধান চাষে উন্নত হওয়ার কারণ: নিম্নলিখিত পরিবেশগুলি অনুকূল হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে ধান চাষে উন্নতি হয়েছে। 

অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশসমূহ:

ধান চাষের প্রধান অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশগুলি হল

  1. জলবায়ু: ধান ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলের ফসল। প্রধানত মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করেই ভারতে ধান চাষ করা হয় বলে ধান ‘মৌসুমি ফসল’ নামে পরিচিত।
  2. উষ্ণতা: ধান চাষের জন্য প্রথমাবস্থায় কমপক্ষে 25° সে. এবং পাকার সময় 27-30° সে. উন্নতা থাকা প্রয়োজন। বীজতলা তৈরি থেকে চারাগাছ জমিতে লাগানো পর্যন্ত উষ্ণতা 17°-20° সে. থাকা দরকার। 17° সে. কম উন্নতায় ধান ভালো জন্মায় না। পশ্চিমবঙ্গে ধান চাষের উল্লেখিত উন্নতা থাকায় ধান চাষের পক্ষে সহায়ক হয়েছে।
  3. বৃষ্টিপাত: ধান জলজ উদ্ভিদ গোত্রের অন্তর্গত বলে ধান গাছের গোড়া ভেজা থাকা প্রয়োজন। এই কারণে ধানচাষের জন্য 150-200 সেমি. বৃষ্টিপাত আদর্শ। ধান গাছ বৃদ্ধির সময় 200 সেমি. বৃষ্টিপাত হওয়া প্রয়োজন। ধান গাছের গোড়ায় অন্তত 40-45 দিন 15 সেমি, জল দাঁড়িয়ে থাকা দরকার। ধান চাষের জন্য প্রচুর জলের প্রয়োজন হয় বলে একে “ইয়ার্ড ফসল’ বলে। কোনো মাসে 10-20 সেমির কম বৃষ্টিপাত হলে জলসেচের প্রয়োজন হয়। পশ্চিমবঙ্গে দঃ পঃ মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ঘটে বলে ধান চাষের প্রয়োজনীয় জলের অভাব হয় না।
  4. কুয়াশা ও শিশির: ধান গাছের পক্ষে শিশির উপকারী হলেও কুয়াশা ক্ষতিকর। কুয়াশা ধানের ফুলের ক্ষতি করে।
    • মৃত্তিকা: উর্বর পলি মাটিতে ধানের ফলন ভালো হয়। নীচে অপ্রবেশ্য শিলার ওপরে 1 মিটার পুরু এঁটেল ও পলল সমৃদ্ধ দোয়াশ মাটির স্তর ধান চাষে পক্ষে উপযুক্ত মৃত্তিকা। পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা, মহানন্দা, গাঙ্গেয় উপত্যকা, বদ্বীপ ও উপকূল অঞ্চলের পলিমাটিতে এজন্য ধান চাষ ভালো হয়।
    • ভূমি: পশ্চিমবঙ্গের নদী উপত্যকা, বদ্বীপ সমভূমি এবং উপকূলের নিম্ন সমভূমির পলিসমৃদ্ধ ভূমি ধানচাষের উপযুক্ত স্থান।

অনুকূল অর্থনৈতিক পরিবেশ:

  1. শ্রমিক: ধান চাষ অত্যন্ত শ্রমনির্ভর কৃষি। ধান চাষের জন্য বীজতলা তৈরি, ভূমিকর্ষণ, চারাগাছ স্থানান্তরিতকরণ, আগাছা নিড়ানো, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, ধান কাটা, বাঁধা, ঝাড়া, মাড়াই, সিদ্ধ, ভানা প্রভৃতি কাজে প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। পশ্চিমবঙ্গের লোকসংখ্যা অধিক ও ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় ধান চাষের প্রয়োজনীয় শ্রমিকের অভাব হয় না ।
  2. মূলধন: নিবিড় ধান চাষের মাধ্যমে অধিক ফলনের জন্য উচ্চফলনশীল বীজ, রাসায়নিক সার, জমি তৈরি প্রভৃতি কারণে প্রচুর মূলধন প্রয়োজন হয়।
  3. পরিবহন ও বণ্টন: ধান চাষকে লাভজনক করে তোলার জন্য কৃষিক্ষেত্র ও বাজারের মধ্যে উন্নত পরিবহন এবং উৎপাদিত ধানের সুষ্ঠু বণ্টনের প্রয়োজন।
  4. বাজার: ধান চাষে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য অধিক চাহিদাসম্পন্ন বাজার থাকা দরকার। পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসীদের প্রধান খাদ্য ভাত হওয়ায় ধানের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। বিষয়টি নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য বা পরে অধ্যায়ন করার জন্য সরাসরি পিডিএফ(PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।