পৃথিবীব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব ?

0
গঙ্গা-পদ্মা-মেঘনার বদ্বীপ অঞ্চলের ওপর পৃথিবীব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব লেখ ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে খুব গুরত্বপূর্ণ তাই এই প্রশ্নটি ছাত্রছাত্রীরা ভালো ভাবে অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। গঙ্গা-পদ্মা-মেঘনার বদ্বীপ অঞ্চলের ওপর পৃথিবীব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তন এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

গঙ্গা-পদ্মা-মেঘনার বদ্বীপ অঞ্চলের ওপর পৃথিবীব্যাপী জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব লেখ ?

ভারত (পশ্চিমবঙ্গ) ও বাংলাদেশের গঙ্গা-পদ্মা-মেঘনার বদ্বীপ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ, (75,000 কিমি)। এখানে বিগত প্রায় পাঁচ কোটি বছর থেকে (ইয়োসিন যুগ) পলি জমা হয়ে বদ্বীপটি গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি সারা পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখানে গড়ে ওঠা দ্বীপগুলির অবস্থা খুবই সংকটজনক।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব:

গ্রিনহাউস এফেক্টের কারণে পৃথিবীব্যাপী উষ্ণতা বৃদ্ধিজনিত কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে সুন্দরবন ও সুন্দরবনের দ্বীপগুলিতে। যেমন – 

  1. সমুদ্রজলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি: পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সুমেরু ও কুমেরু মহাদেশের বরফ গলে সমুদ্রজলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের (2015 খ্রি:) তথ্য অনুযায়ী সুন্দরবন অঞ্চলের জলতল প্রতিবছর 5-8 মিমি করে বাড়ছে। ফলে লোহাচড়া, নিউমুর, ঘোড়ামারা প্রভৃতি দ্বীপ ধীরে ধীরে সমুদ্রের তলায় চলে যাচ্ছে। 
  2. ঘূর্ণিঝড়: সমুদ্রজলের উয়তা বৃদ্ধির কারণে এখানে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বেড়ে গেছে। যেমন—2009 খ্রিস্টাব্দের সাইক্লোন ‘আইলা’ দ্বীপগুলির মারাত্মক ক্ষতি করে। 
  3. ম্যানগ্রোভ অরণ্য ধ্বংস : সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য। 1987 খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো (UNESCO) এটিকে ‘বিশ্ব হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় 2000-2016 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সুন্দরবনের 10 শতাংশ ম্যানগ্রোভ অরণ্য ধ্বংস হয়েছে। 
  4. ভূমির লবণতা বৃদ্ধি: সুন্দরবনের জলতল বৃদ্ধি পাওয়ায় সমুদ্রের লবণাক্ত জল কৃষি জমিতে প্রবেশ করে জমির লবণতা বৃদ্ধি করে। এর ফলে সুন্দরবনের দ্বীপগুলিতে কৃষি ও খাদ্যের সমস্যা বাড়ছে। এইসব কারণে সুন্দরবনের দ্বীপগুলি আজ অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। যেমন—
  5. লোহাচড়া দ্বীপ: হুগলি নদীর মোহানায় লোহাচড়া দ্বীপ অবস্থিত। 1990-এর দশকে এই দ্বীপটি জলমগ্ন হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এই দ্বীপে আগে 6000 জন মানুষ বাস করত। এখন সবাইকে অন্যত্র সরানো হয়েছে। 2009 খ্রিস্টাব্দে উচ্চমানের উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেছে দ্বীপটি আবার জলতল থেকে উত্থিত হচ্ছে। 
  6. নিউমুর বা পূর্বাশা দ্বীপ (বাংলাদেশে এর নাম দক্ষিণ তালপট্টি): ইছামতি-রায়মঙ্গল-হাড়িয়াভাঙা নদীর মোহানায় গড়ে উঠেছে নিউমুর বা পূর্বাশা দ্বীপ। 1974 খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম আমেরিকার উপগ্রহ চিত্রে এই দ্বীপের অস্তিত্ব জানা যায়। 1970 খ্রিস্টাব্দে ‘ভোলা” নামক সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড়ে এই দ্বীপটি উত্থিত হয়। এই দ্বীপটির বর্তমান আয়তন 4.93 বর্গকিমি, যা 1970 খ্রিস্টাব্দে ছিল 40.11 বর্গকিমি। এই দ্বীপে কোনো জনবসতি গড়ে ওঠেনি।
  7. ঘোড়ামারা দ্বীপ: সুন্দরবন বদ্বীপের দক্ষিণে 250 বছর আগে জেগে উঠেছিল এই দ্বীপ। বর্তমানে দ্বীপটির দুই-তৃতীয়াংশ জলে ডুবে গেছে। তাই এই দ্বীপের 7000-এরও বেশি অধিবাসীকে সাহারদ্বীপে (সুন্দরবনের বৃহত্তম দ্বীপ) স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

উপরোক্ত প্রশ্নটি থেকে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। প্রশ্নের বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।