বায়ুর চাপবলয় ও বায়ুপ্রবাহ ?

0
বায়ুর চাপবলয় ও বায়ুপ্রবাহ কী ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই উপযোগী এবং এই প্রশ্নটি তারা গুরত্ব সহকারে অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। বায়ুর চাপবলয় ও বায়ুপ্রবাহ কী এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

বায়ুর চাপবলয় ও বায়ুপ্রবাহ কী ?

বায়ুর চাপের পরিমাপ:

বায়ুচাপ সর্বমুখী বায়ু কোনো বস্তুর ওপর সবদিক থেকে চাপ দেয়। এই বায়ুচাপ ব্যারোমিটার যন্ত্রে পারদস্তম্ভের উচ্চতা দ্বারা মাপা হয়। পৃথিবীর মধ্য অক্ষাংশীয় অঞ্চল 45° উত্তর সমাক্ষরেখায় 15° সেন্টিগ্রেড গড় উষ্ণতায় সমুদ্রপৃষ্ঠীয় ব্যারোমিটারে পারদস্তম্ভ সাধারণত 760 মিলিমিটার বা 29-92 ইঞ্চি উঁচু হয়। 1 বর্গসেমি পরিমিত স্থানে ওই পারদস্তম্ভের ওজন প্রায় 1 কিলোগ্রাম। অর্থাৎ ওই স্থানে সমুদ্রপৃষ্ঠে 1 বর্গসেমিতে বায়ুচাপ 1 কিলোগ্রাম। একে প্রমাণ সমুদ্রপৃষ্ঠীয় বায়ুচাপ বলে। বায়ুচাপ মাপার একক মিলিবার। 1 মিলিবার 0.02953 ইঞ্চি পারদস্তম্ভের চাপের সমান। অর্থাৎও মিলিমিটার উচ্চ পারদস্তম্ভের চাপ 4 মিলিবারের সমান। এই হিসেবে 760 মিমি বা 76 সেমি উচ্চ পারদস্তম্ভের চাপ হয় 1013-25 মিলিবার। অর্থাৎ সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ 1013-25 মিলিবার। এখন আমাদের বায়ুর চাপের পরিমাপ জেনে নেওয়া দরকার। আর নিখুঁতভাবে বায়ুর চাপ পরিমাপ করতে প্রয়োজন হয় নানা যন্ত্রপাতি । এই যন্ত্রপাতিগুলি হলো-

  1. টরিসেলি ব্যারোমিটার: ইতালীয় বিজ্ঞানী টরিসেলি 1643 খ্রিস্টাব্দে বায়ুর চাপ নির্ণয় করার জন্য এই যন্ত্র আবিষ্কার করেন। এই ব্যারোমিটার থেকে বর্তমানে ফর্টিন্স ব্যারোমিটার, অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার, কিউ ব্যারোমিটার প্রভৃতি তৈরি হয়েছে।
  2. ফর্টিন্স ব্যারোমিটার: বায়ুর চাপ অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ করার জন্য ফর্টিন্স ব্যারোমিটার কার্যকরী। এটিও একটি পারদ ব্যারোমিটার জে ফর্টিন এই ব্যারোমিটার উদ্ভাবন করেন।
  3. অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার: এটি পারদবিহীন ব্যারোমিটার (Aneroid -এর অর্থ ‘Withoutliquid’)। নৌকা ও ছোটো বিমানে এই যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। ফরাসি বিজ্ঞানী এল ভিদি এর আবিষ্কারক।

অত্যাধুনিক যন্ত্র:

  • ব্যারোগ্রাফ: এই যন্ত্র দ্বারা অতি ক্ষুদ্রতর বায়ুচাপের হ্রাসবৃদ্ধি ও ধারাবাহিক রেখাচিত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়।
  • অল্টিমিটার: উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চাপের পরিবর্তন এই যন্ত্রে ধরা পড়ে তাই বিমানে এই যন্ত্র ব্যবহৃত হয়।
  • হিপসোমিটার: এই যন্ত্র দ্বারা ফুটন্ত তরলের উষ্ণতাকে ভিত্তি করে বায়ুচাপ নির্ণয় করা হয়।

বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণ:

পৃথিবীর বায়ুর চাপ সর্বত্র সমান হয় না। বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর বায়ুর চাপ পরিবর্তন হয়। তোমরা এবার বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণগুলি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা করে নাও।

  1. পৃথিবী পৃষ্ঠের উচ্চতা ও বায়ুচাপ: ভূপৃষ্ঠের নিকট বা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কম উচ্চতাতে বায়ুর চাপ বেশি হয়। কারণ- 
    • নিম্নে মাধ্যাকর্ষণের টান বেশি। 
    • ওপরের বায়ুস্তরের চাপ বেশি থাকে। 
    • বায়ুর অণু পরিমাণে বেশি থাকে।
  2. বায়ুর উষ্ণতা ও চাপের সম্পর্ক: বায়ুর উষ্ণতা বাড়লে বায়ু প্রসারিত হয়। প্রসারিত বায়ুর কণাগুলি দূরে দূরে অবস্থান করে। ফলে বায়ুর ঘনত্ব কমে, বায়ু হালকা হয়। আর হালকা বায়ুর চাপ কম হয়। উষ্ণ বায়ুতে জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বেশি। এই বায়ু আর্দ্র হয়। তাই চাপও কম হয়। যেমন – নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ু অন্যদিকে শীতল বায়ু সংকুচিত, গাঢ় ও ভারী তাই বায়ুচাপ বেশি হয়। শীতল বায়ুর জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা কম তাই চাপ বেশি। যেমন—মেরু বায়ু।

উপরের প্রস্নোধৃত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। এই প্রশ্নের বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।