ভূমিরূপ সৃষ্টির কার্যকারণ ?

0
বায়ুর কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ সৃষ্টির কার্যকারণ সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই উপযোগী এবং এই প্রশ্নটি তারা গুরত্ব সহকারে অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। বায়ুর কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ সৃষ্টির কার্যকারণ এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

বায়ুর কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ সৃষ্টির কার্যকারণ সম্পর্ক বিশ্লেষণ করো ?

বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ:

ভূপৃষ্ঠে বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে (অবঘর্ষ, ঘর্ষণ ও অপসারণ প্রক্রিয়ায়) বিভিন্ন ধরনের ভূমিরূপ গড়ে ওঠে। যেমন-

  1.  অপসারণের ফলে ক্ষয়: উদ্ভিদশূন্য, বাধাহীন মরু অঞ্চলে বায়ু জোরে প্রবাহিত হয়। বালুকণা সহজেই অন্যত্র সরে যায়, উড়ে যায়। এভাবে ওপরের বালুকাস্তর অপসারিত হলে নীচের বালুকাস্তর বেরিয়ে পড়ে। সেই বালুকণাও অপসারিত হয়। আরও নীচের অংশ উন্মুক্ত হয়। এভাবে চলতে থাকলে ওই অঞ্চলটি চারদিকের অঞ্চল থেকে অবনমিত হয় বা নীচু হয়। একেই অপসারণ গর্ত বলে। এক সময় নীচের ভৌমজলস্তর বেরিয়ে পড়ে, সৃষ্টি হয় মরুদ্যান। মিশরের কাতারা (Qattara) পৃথিবীর বৃহত্তম অপসারণ সৃষ্ট গর্ত। ভারতের থর মরুভূমিতে এই ধরনের হ্রদ ধান্দ নামে পরিচিত। অপসারণে সৃষ্ট গর্ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে ব্লো আউট; আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বাফেলো; মঙ্গোলিয়াতে পিয়াংকিয়াং নামে পরিচিত।
  2. গৌর: মরুভূমিতে বায়ুর গতিপথে অনেক শিলাস্তূপ অবস্থান করে। বায়ুবাহিত বালিকণা ওই শিলাস্তূপটির তলদেশকে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় ক্ষয় করে। ফলে নীচের দিকটি ক্ষয় পেয়ে সরু হয়, ওপরের দিকটি ক্ষয় না পেয়ে চওড়া থাকে। এরূপ ভূমিরূপকে সাহারা মরুভূমিতে গরো বলে। একত্রে অনেকগুলি গরো থাকলে তাকে গৌর বলে। ব্যাঙের ছাতার মতো দেখতে বলে অনেক ভুমিরূপবিজ্ঞানী এগুলিকে Mushroom Rock বলেছেন।
  3. জিউগেন: মরু অঞ্চলে অনেক সময় ভূপৃষ্ঠের ওপরে কঠিন শিলাস্তর ও নীচে কোমল শিলাস্তর অনুভূমিক বা সমান্তরালভাবে থাকে ঠিক ‘Z’ অক্ষরের দুই বাহুর মতো। অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় নীচের স্তর দ্রুত ক্ষয় পেয়ে চওড়া হয়। ওপরের স্তর ক্ষয় না পেয়ে শিলাস্তর চওড়া থাকে। ফলে নীচের চওড়া ও গভীর খাতের ওপর চওড়া শিলাস্তরের জিউগেন অবস্থান করে। জিউগেন 3 – 30 মিটার পর্যন্ত উঁচু হয় যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাংশে সোনেরান মরুভূমিতে অসংখ্য জিউগেন দেখা যায়।
  4. ইয়ারদাঙ: বায়ুর গতিপথে অনেক সময় কঠিন ও কোমল শিলা উল্লম্বভাবে অবস্থান করে। বায়ুবাহিত বালিকণা অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় এই দুই শিলাস্তরকে ক্ষয় করে। কোমল শিলা অধিক ও কঠিন শিলা কম ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। এরূপ অসমানুপাতিক ক্ষয়ে শিলাস্তূপকে ইয়ারদাঙ বলে। ইয়ারদাঙ ক্ষয় হয়ে তীক্ষ্ণ আকার নিলে তা হয় নিডিলস। তুর্কিস্তানে ভ্রমণকালে এস হেডিন প্রথম এরূপ ভূমিরূপকে প্রত্যক্ষ করেন। 1934 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ব্ল্যাক ওয়েল্ডার প্রথম এরূপ ভূমিরূপকে ইয়ারদাঙ নাম দেন। চিলির আটাকামা মরুভূমিতে ইয়ারদাঙ দেখা যায়।
  5. ইনসেলবার্জ: মরুভূমিতে চারদিকের সমতল অঞ্চলের মাঝে ইতস্তত ও বিক্ষিপ্তভাবে দ্বীপের মতো অবশিষ্ট পাহাড়কে ইনসেলবার্জ বলে। এগুলি পেডিমেন্টের ওপরে বিচ্ছিন্নভাবে থাকে, পার্শ্বটাল খাড়াই হয়। শিখরদেশ কিছুটা গোলাকৃতির হয়। চারদিকের কোমল শিলা ক্ষয় হয়ে নীচু হয়ে গেছে। মাঝে গ্র্যানাইট, নিস, কংগ্লোমারেট প্রভৃতি কঠিন শিলা ক্ষয় প্রতিরোধ করে ইনসেলবার্জ গঠন করে। এটি আর্দ্র অঞ্চলের মোনাডনকের সঙ্গে তুনলীয়।

উপরের প্রস্নোধৃত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। এই প্রশ্নের বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।