ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়ার বিবরণ দাও ?

0
ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়ার বিবরণ দাও ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই উপযোগী এই প্রশ্নটি তারা অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়ার বিবরণ দাও ?

ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া সমূহ: ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া গুলিকে দু-ভাগে ভাগ করা যায় অন্তর্জাত প্রক্রিয়া ও বহির্জাত প্রক্রিয়া।

অন্তর্জাত প্রক্রিয়া সমূহ: ভূ-অভ্যন্তরে উদ্ভূত বলের প্রভাবে স্থানীয় বা আঞ্চলিকভাবে কাঠিন ভূ-ত্বকের যে ধীর ও আকস্মিক পরিবর্তন ঘটে তাকে ভূমিরূপ গঠনের অন্তর্জাত প্রক্রিয়া বলে। 

এই প্রক্রিয়া নিম্নলিখিত প্রক্রিয়াগুলির মাধ্যমে সংঘটিত হয় :

ভূ-বিপর্যয়:

যে সব আলোড়নের ফলে কঠিন ভূ-ত্বকের উল্লম্ব বা অনুভূমিক ভাবে আপেক্ষিক পরিবর্তন ঘটে। তাকে ভূ-বিপর্যয় বলে। এর প্রভাবে পর্বত ও মালভূমির সৃষ্টি হয়, শিলাস্তরে ভাঁজ পড়ে ও চ্যুতির সৃষ্টি হয়। ব্যাপক অর্থে ভূ-বিপর্যয়কে ভূ-গাঠনিক আলোড়নও বলা হয়ে থাকে। এই ভূ-আলোড়নকে দু’ভাগে ভাগ করা যায় – ধীর আলোড়ন ও আকস্মিক আলোড়ন।

ধীর আলোড়ন:

ভূ-অভ্যন্তরীণ যেসব আলোড়নের প্রভাবে অত্যন্ত ধীরগতিতে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটে তাদের ধীর আলোড়ন বলে। ধীর ভূ-গাঠনিক আলোড়নকে দু’ভাগে ভাগ করা যায় – মহিভাবক আলোড়ন ও গিরিজনি আলোড়ন।

মহিভাবক আলোড়ন:

যে সব ভূ-গাঠনিক আলোড়ন ভূপৃষ্ঠে উল্লম্বভাবে বা পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বরাবর কাজ করার ফলে ভূত্বকীয় অংশ উল্লম্বভাবে ঊর্ধ্বে উঠে যায় বা বসে যায় এবং মহাদেশ, মালভূমি, চ্যুতি, ভৃগুতট, স্তুপ পর্বত, প্রস্ত উপত্যকা প্রভৃতি ভূমিরূপের উদ্ভব ঘটে, তাদের মহিভাবক আলোড়ন বলে ৷ মহাদেশীয় ও মহাসাগরীয় ভূ-ভাগ গঠনে ও পরিবর্তনে এই আলোড়নের যথেষ্ট প্রভাব থাকায় একে মহিভাবক আলোড়ন বলা হয়ে থাকে।

গিরিজনি আলোড়ন:

যে আলোড়ন ভূপৃষ্ঠে অনুভূমিকভাবে কাজ করে ও যার ফলে ভূত্বকে টান পড়ে, শিলায় সংকোচন ও পীড়ন ঘটে এবং যার প্রভাবে ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তি ঘটে, তাকে গিরিজনি আলোড়ন বলে।

আকস্মিক আলোড়ন:

হঠাৎ যে সব ভূ-আলোড়ন ঘটে তাদের আকস্মিক আলোড়ন বলে। আকস্মিক আলোড়ন দু’প্রকারের হয় -ভূমিকম্প ও আগ্নেয়চ্ছ্বাস। প্রাকৃতিক বা অন্য সব কারণে হঠাৎ ক্ষণিকের জন্য ভূমিভাগ কম্পিত হয়ে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটলে তাকে ভূমিকম্প বলে। ভূ-অভ্যন্তরের উত্তপ্ত গলিত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠে বেরিয়ে এলে, তাকে আগ্নেয়চ্ছ্বাস বলে।

বহির্জাত প্রক্রিয়া:

ভূমিরূপ গঠনকারী বাহ্যিক বল বা প্রক্রিয়া সমূহকে নগ্নীভবন বা বিনাশমূলক প্রক্রিয়া-ও বলা হয়ে থাকে। ভূপৃষ্ঠের বাইরে সৃষ্ট স্থিতিশীল ( রোদ, বৃষ্টি, আর্দ্রতা প্রভৃতি) ও গতিশীল (নদী, বায়ু, হিমবাহ, সমুদ্রতরঙ্গ প্রভৃতির কার্য) প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে পলিসমূহের ক্ষয় ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটলে তাদের একত্রে ভূমিরূপ গঠনের বহির্জাত প্রক্রিয়া বলে। বহির্জাত প্রক্রিয়াকে দু’ভাগে ভাগ করা যায় – আবহবিকার ও পৰ্যায়ন বা ক্রমায়ন প্রক্রিয়া ।

আবহবিকার:

যে কোনো প্রকারে শিলা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে সেই স্থানেই পড়ে থাকলে তাকে আবহবিকার বলে। এই প্রক্রিয়া ভূমিরূপ পরিবর্তনে সাহায্য করে।

পর্যায়ন বা ক্রমায়ন প্রক্রিয়া:

যে সব বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উঁচুনিচু বা অনিয়মিত ভূমিভাগ ক্ষয় ও সঞ্চয় কার্যের মধ্য দিয়ে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ সাধারণ বা সমানতলে উপনীত হয় সেই সব প্রক্রিয়াকে একত্রে পর্যায়ন বা ক্রমায়ন প্রক্রিয়া বলে। পর্যায়ন দুটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে— অবরোহণ ও আরোহণ।

অবরোহণ:

যে সব বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের উঁচু জায়গা গুলি ধীরে ধীরে ক্ষয়ে গিয়ে ক্রমশ নীচু হয়ে যায় সেই সব প্রক্রিয়াকে একত্রে অবরোহণ বলে।

আরোহণ:

যে সব বহির্জাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূমিভাগের নিচু অংশগুলি ক্ষয়জাত পদার্থের দ্বারা ক্রমশ ভরাট হয়ে ভূমিভাগ তুলনামূলক ভাবে সামান্য উঁচু হয়ে যায়, সেই সব প্রক্রিয়াকে একত্রে আরোহণ বলে ।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। প্রশ্নের বিষয়টি নিজের কাছে সংরক্ষিত করার জন্য বা পরে অধ্যায়ন করার ক্ষেত্রে সরাসরি (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।