পৃথিবীর আকার সম্বন্ধে প্রাচীন চিন্তাবিদ ও দার্শনিকদের ধারণা ?

পৃথিবীর আকার বা আকৃতি সম্বন্ধে প্রাচীন চিন্তাবিদ ও দার্শনিকদের ধারণা কেমন ছিল ?

0
পৃথিবীর আকার সম্বন্ধে প্রাচীন চিন্তাবিদ ও দার্শনিকদের ধারণা ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি পরীক্ষার জন্য খুবই উপযোগী। তাই এই প্রশ্নটি ছাত্রছাত্রীরা অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। “পৃথিবীর আকার বা আকৃতি সম্বন্ধে প্রাচীন চিন্তাবিদ ও দার্শনিকদের ধারণা” এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

সেই প্রাচীন কাল থেকেই প্রতিটি উন্নত রাষ্ট্রে তাদের নিজস্ব জ্ঞানীগুণী চিন্তাবিদ ও দার্শনিক ব্যক্তিরা ছিলেন। আর তাঁদের মাথাতেই পৃথিবীর নিজস্ব স্বরূপ বা আকার নিয়ে নানা চিন্তা ভাবনা চলতে থাকে। পৃথিবীর আকার সম্বন্ধে প্রাচীন চিন্তাবিদ ও দার্শনিকগণ যে সব ধারণা উল্লেখ করেন সেগুলি সংক্ষেপে নিম্নে আলোচনা করা হলো।

থেলেস:

খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম বা ষষ্ঠ শতাব্দীতে থেলেস জ্যামিতি চর্চার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে অবস্থিত বিষয় সমূহের পরিমাপও অবস্থান নির্ণয় করতে সক্ষম হন এবং থেলেস – ই প্রথম গ্রেট দার্শনিক বা বৈজ্ঞানিক যিনি পৃথিবীকে জলে ভাসমান চাকতি (Disk) আকৃতির বস্তু বলে অনুমান করেন। তিনি মনে করতেন পৃথিবী কাঠের গুড়ির মতো জলে ভাসমান।

পিথাগোরাস:

যিশু খ্রীষ্টের জন্মের প্রায় ৬০০ বছর আগে গ্রিক পন্ডিত পিথাগোরাস(Pythagoras) সবার আগে বা সর্বপ্রথম প্রস্তাব করেন যে পৃথিবী আদৌ চ্যাপ্টা নয়, পৃথিবীর আকৃতি গোল এবং গোলকের মতো গোল। তিনি মনে করতেন যে, গোলক হল সর্বোত্তম জ্যামিতিক আকার। আর পৃথিবী যদি মহাবিশ্বের কেন্দ্র হয়, তবে পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার ছাড়া অন্য কি আকৃতিই বা তার হতে পারে। অনেক পন্ডিতই পিথাগোরাসের ধারণার সঙ্গে একমত ছিলেন।

আ্যনাস্কিম্যান্ডার এবং আ্যনাস্কিমেনস:

আ্যনাস্কিম্যান্ডার(৬১০ খ্রিস্টপূর্বে) এর মতে, পৃথিবী হলো চারদিকে সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত চ্যাপ্টা ছোটো ছোটো বেলনাকার এবং উপরিভাগ উঁচু ও স্থায়ী  গোলাকৃতি বিশিষ্ট ভূখণ্ড। আবার আ্যনাস্কিমেনস, এর মতে “পৃথিবী হলো চ্যাপ্টা এবং বাতাসে ভর করে রয়েছে”।

অ্যারিস্টটল:

গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল লক্ষ্য করেন চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবীর ছায়া চন্দ্রের উপর পড়লে তার ছায়া গোলাকার দেখায়। থেকে তিনি সিদ্ধান্তে আসেন যে পৃথিবীর আকার গোলকের মতো। পৃথিবী যদি সমতল পাত্রের মতো হতো তাহলে পৃথিবীর ছায়া চন্দ্রের উপর পড়লে ছায়া আরো বেশি বাঁকানো হতো। পৃথিবী গোলাকার বলে চন্দ্র গ্রহণের সময় চাঁদের উপর পৃথিবীর ছায়া গোলাকার দেখায়।

ঐতিহাসিক হেকাটিয়াস:

হেকাটিয়াস চারিদিকে জল দ্বারা ঘেরা সমতল বা চ্যাপ্টা পৃথিবীর আকারের ধারণার কথা বলেছিলেন।

এরাটোসথেনিস:

এরাটোসথেনিস পৃথিবী থেকে সূর্য পৃথিবী ও চাঁদের দূরত্ব পরিমাপ করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি মনে করতেন, পৃথিবী গোলাকের মতো এবং অঙ্কের মাধ্যমে নিরক্ষরেখার দৈর্ঘ্য ও পৃথিবীর পরিধি পরিমাপ করা সম্ভব। এসব কারণে এরাটোসথেনিসকে ভূ – আকৃতি বিদ্যার(Geodesy) জনক বলা হয়।

বরাহমিহির, আর্যভট্ট, কোপারনিকাস প্রমূখ পন্ডিতের ধারণা:

বরাহমিহির, আর্যভট্ট, কোপারনিকাস প্রমূখ পন্ডিতেরাও মনে করতেন, পৃথিবীর আকৃতি গোলাকার। তবে সে সময় বেশিরভাগ লোকই তাঁদের কথা বিশ্বাস করতেন না।

মধ্যযুগে মুসলিম পর্যটকদের ধারণা:

মধ্যযুগের মুসলিম পর্যটক বাগদাদনিবাসী মাসুদি, খরেজমনিবাসী আল – বিরুনী, ইবন বাতুতা যাঁরা তাঁদের পর্যটনের মহামূল্যবান কাহিনী লিপিবদ্ধ করে গেছেন, পৃথিবীর সম্পর্কিত তাঁদের বর্ণনার গুরুত্বও কম নয়। এইসব পর্যটক ও ভূগোলবিদগণও পৃথিবীকে চ্যাপ্টা বলে কল্পনা করেন। তবে খ্রিস্টানদের মতো পৃথিবীর আকার আয়তক্ষেত্র না বলে, তাঁরা বলেছিলেন পৃথিবী চ্যাপ্টা গোল আকারের। তাঁরা তাঁদের মানচিত্রে পৃথিবীর এমন চিত্রই এঁকেছিলেন।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি আপনার কোনো সাহায্যে লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করে তাদের সাহায্য করুন। প্রশ্নের বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করার জন্য সরাসরি (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।