মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণগুলি ?

0
মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা অধ্যায়ন করবো ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে যে প্রশ্নটি পরীক্ষার জন্য খুবই উপযোগী। এই প্রশ্নটি অধ্যায়ন করলে ছাত্রছাত্রীরা খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণ এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?

মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণ: মৃত্তিকা ক্ষয়ের কারণগুলিকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করে নীচে আলোচনা করা হলো – 

প্রাকৃতিক কারণ সমূহ:

জলবায়ু:

বৃষ্টিপাত, ৰায়ুপ্রবাহ ও উয়তা – জলবায়ুর এই তিনটি উপাদান মৃত্তিকা ক্ষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।

বৃষ্টিপাত (Rainfall):

জল মৃত্তিকা ক্ষয়ের একটি সর্বপ্রধান মাধ্যম এবং ভূমি-ভাগের ওপর এই জলের প্রধান উৎস হল বৃষ্টিপাত। বৃষ্টিপাত সৃষ্ট স্প্ল্যাশ (splash) ও পৃষ্ঠপ্রবাহের (surface run off) মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি মাটি ক্ষয় হয়ে থাকে। মৃত্তিকা ক্ষয়ের ওপর বৃষ্টিপাতের প্রভাবকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।

  1. বৃষ্টিপাতের পরিমাণ (Amount Of Rainfall): বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে জলের পরিমাণগত বৃদ্ধি ঘটে বলে ক্ষয়ের পরিমাণও বেশি হয়।
  2. বৃষ্টিপাতের স্থায়ীত্ব ও ধরন (Duration And Type Of Rainfall): ধীরে ধীরে সারাদিন ধরে টিপ্ টিপ্‌ করে বৃষ্টিপাতের চেয়ে অতি অল্প সময়ে মুশলধারে বৃষ্টিপাত অত্যধিক পরিমাণ মৃত্তিকা ক্ষয় ঘটায়।
  3. বৃষ্টির ফোঁটার আকার ও গতিবেগ (Size Of The Rain Drops And Its Motion): বৃষ্টির ফোঁটার আকার যদি বড়ো হয় এবং গতিবেগও যদি অধিক থাকে তবে সহজেই মৃত্তিকার কণার স্থানচ্যুতি ঘটে। ফলে মৃত্তিকার অবনমন ঘটে।

বায়ুপ্রবাহজনিত ক্ষয় (Wind Erosion):

জলের মতো বায়ুপ্রবাহ ভূপৃষ্ঠের সরু, উপসরু ও উপকূলবর্তী অঞ্চলে ক্ষয়কার্য করে থাকে। বায়ুর প্রভাবে সাধারণত তিন ধরনের ক্ষয়কার্য ঘটে থাকে।

  1. প্রলম্বন বা ভাসমান প্রক্রিয়া (Suspension): অতি সূক্ষ্ম অর্থাৎ 0-1 মিলিমিটার বা তার কম ব্যাসযুক্ত বালুকণা যখন বায়ুপ্রবাহের কারণে স্থানান্তরিত হয়ে ভূমিভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, তখন তাকে ভাসমান প্রক্রিয়ায় ক্ষয় বলে। হিসাব করে দেখা গেছে, বায়ু দ্বারা সৃষ্ট মৃত্তিকা ক্ষয়ের প্রায় 30 থেকে 36 শতাংশ পর্যন্ত ক্ষয় এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে।
  2. লম্বদান প্রক্রিয়া(Saltation Process): এটি বায়ুর ক্ষয়কার্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। অপেক্ষাকৃত বড়ো ও ভারী কণার বালুকারাশি বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভূমির ঠোক্কর বা ধাক্কা খেতে খেতে এগিয়ে চলে। একে লক্ষ্মদান প্রক্রিয়া বলে। ভূপৃষ্ঠে সজ্জিত বালুকারাশির ওপর অন্য বালুকণা এসে পড়লে বায়ুর আঘাতের ফলে তারা লম্বদান করে। ভূবিজ্ঞানী বাগলন্ডের মতে, ভূমি থেকে এক মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় 1 মিলিমিটার ব্যাসযুক্ত বালুকণা লাফিয়ে এগিয়ে যেতে সক্ষম।
  3. গড়ানে প্রক্রিয়া (Surface Creep): বৃহদাকার বালুকণা (0.5 থেকে 2.0 মিলিমিটার ব্যাস) ও নুড়ি বায়ুপ্রবাহের টানে বা আকর্ষণে ভূমির ওপর দিয়ে গড়াতে গড়াতে এগিয়ে চলে। একে গড়ানে প্রক্রিয়ায় ক্ষয় বলা হয়।
  4. উষ্ণতা: উষ্ণতার প্রভাবে শুষ্কমাটি খণ্ডিত হয়ে সূক্ষ্ম বালুকণায় পরিণত হলে তা সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

ভূ-প্রকৃতি:

বন্ধুর ভূপ্রকৃতিতে ভূমির ঢাল বেশি থাকে বলে ভূমিক্ষয়ও বেশি হয়। এজন্য পার্বত্য ও মালভূমি অঞ্চলে ভূমির ঢাল বেশি চলে ভূমিক্ষয়ের পরিমাণ বেশি হয়। আবার সমভূমিতে ভূমির ঢাল কম বলে জল ধীরে ধীরে প্রবাহিত হয় বলে ভূমিক্ষয়ও কম হয়।

ভূমিঢাল:

ভূবিজ্ঞানী বাটেন-এর মতে, প্রতি 1% ভূমিঢাল বৃদ্ধিতে 25% ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি পায়। এজন্য সমভূমি অপেক্ষা মালভূমি ও পার্বত্যভূমির ঢাল বেশি বলে মৃত্তিকা ক্ষয়ও বেশি।

শিলার প্রকৃতি:

কঠিন প্রকৃতির শিলা অপেক্ষা নরম প্রকৃতির শিলা বেশি ক্ষয় হয়।

মাটির প্রকৃতি:

স্থূল বা মোটা প্রথনের মাটি কম ক্ষয় হয়। সূক্ষ্ম প্রথনের মাটি দ্রুত ক্ষয় হয়।

স্বাভাবিক উদ্ভিদ:

মাটির উপরে উদ্ভিদাবরণ মাটির ক্ষয়ের হ্রাস ঘটায়।

 উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি আপনার পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করতে ভুলবেন না। প্রশ্নটি পরে অধ্যায়ন করার ক্ষেত্রে বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করার জন্য সরাসরি (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।