মধ্যগতিতে নদী সৃষ্ট ভূমিরূপ ?

0
মধ্যগতিতে নদী সৃষ্ট ভূমিরূপের আলোচনা করো ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে খুব গুরত্বপূর্ণ তাই এই প্রশ্নটি ছাত্রছাত্রীরা ভালো ভাবে অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। মধ্যগতিতে নদী সৃষ্ট ভূমিরূপ এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

মধ্যগতিতে নদী সৃষ্ট ভূমিরূপের আলোচনা করো ?

নদী-বাঁকের কথা উঠলেই মনে পড়ে – আমাদের ছোটো নদী চলে আঁকেবাঁকে”। মধ্য ও নিম্নগতিতে যেখানে ভূমির ঢাল অত্যন্ত কম সেখানে সম্মুখে সামান্য একটু বাধা পেলেই বা ভূমির ঢাল যেদিকে সামান্য উঁচু সেদিকেই নদীপ্রবাহ বেঁকে যায়। ফলে এই অংশে নদী অত্যন্ত আঁকাবাঁকাভাবে প্রবাহিত হয় এবং নদীতে বহু বাঁক দেখা যায়। এই বাঁকগুলিকে নদী-বাঁক (মিয়েন্ডার) বলে। “মিয়েন্ডার’ শব্দটি এশিয়া মাইনরের বাঁকবহুল নদী মিয়েন্ড্রস থেকে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গে নদিয়া জেলায় ভাগীরথী ও জলঙ্গী নদীতেও বহু নদী-বাঁক দেখা যায়। নদীতে যেখানেই বাঁক সেখানে একদিকের পাড় খাড়াই হয় আর অপরদিকের পাড় ঢালু হয়।

খাঁড়া পাড়: নদী-বাঁকের যে দিকের পাড় নদীর স্রোতের আঘাতে ভাঙে সেই পাড় ডাঙার দিকে ঢুকে যায়। সেই দিকের পাড়টাকে অতল বা খাড়া পাড় বলে।

ঢালু পাড়: নদী-বাঁকের যে দিকের পাড় নদীর দিকে এগিয়ে যায়, সেই পাড়কে উত্তল বা ঢালু পাড় বলে। উত্তল পাড়ে নদী সঞ্চয়কার্য করে। জলের গভীরতা কম হয়। অবতল (খাড়া) পাড়ের দিকে কুণ্ডলী প্রবাহের কারণে নদীখাত ক্রমশ গভীর হতে থাকে। স্রোতের টান বেশি থাকে। বর্ষাকালে নদীতে নামলে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ: অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ সৃষ্টি হয় নদীর ক্ষয়, বহন ও অবক্ষেপণের মিলিত কার্যের ফলে। নিম্নপ্রবাহে ঢাল কম থাকায় নদী সর্পিল ও আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয়। তখন নদীর উত্তল বাঁকের তুলনায় অবতল বাঁকের গতিবেগ বেশি থাকে। তাই অবতল বাঁকে ক্ষয়কার্য চলে ও উত্তল বাঁকে পলি, কাদা ইত্যাদি সঞ্চিত হয়। ফলে নদী-বাঁক আরও বাড়তে থাকে। এভাবে বাঁকের মধ্যবর্তী স্থান সংকীর্ণ হতে হতে একসময় সামান্য ব্যবধানটিও লুপ্ত হয়। নদী তখন অধিক বাঁকময় পথ পরিত্যাগ করে সোজা পথে প্রবাহিত হয় এবং পরিত্যক্ত বাঁকটি হ্রদে পরিণত হয়। এই হ্রদ দেখতে ঘোড়ার খুরের মতো হয় বলে একে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বা সর্ট হ্রদ বলে। যেমন- পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গার বদ্বীপ অঞ্চলে এরূপ বহু অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ দেখা যায়।

প্লাবনভূমি: নদীর মধ্য ও নিম্ন গতিতে ঢাল ও স্রোতের বেগ কম হওয়ায় নদীর বোঝা বহন করার শক্তিও কমে যায় ৷বর্ষাতে অতিরিক্ত জল নদীতে চলে এলে নদী তা বইতে পারে না, তখন সহজেই বন্যা বা প্লাবনের সৃষ্টি হয়। নদী তীরভূমি বা স্বাভাবিক বাঁধের দু-পাশের নীচু জমিতে তখন বন্যার জল জমে থাকে। নদী-জলের পলি ক্রমাগত থিতিয়ে পড়ার ফলে এখানে পলিগঠিত ভূমি বা প্লাবনভূমি গড়ে ওঠে। যেমন- গঙ্গা, ইয়াংসি, নীল, সিন্ধু নদীর মধ্য ও নিম্নপ্রবাহে প্লাবনভূমি দেখা যায় ৷ 

স্বাভাবিক বাঁধ: মধ্যগতিতে ঢাল কম বলে নদী ধীরগতিতে প্রবাহিত হয়। বর্ষায় নদীতে অধিক জল এসে পড়লে নদী তা বহন করতে পারে না। তখন দু-কূল উপচে বন্যা হয়। এই সময় নদীর দু-পাশে বালি, পলি, প্রস্তরখণ্ড সঞ্চিত হয়ে তীরভূমিগুলি বাঁধের মতো উঁচু হয়ে ওঠে। একে স্বাভাবিক বাঁধ বা লেভি বলে। বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে স্বাভাবিক বাঁধগুলিতে রৈখিক প্রকৃতির জনবসতি গড়ে ওঠে।

উপরোক্ত প্রশ্নটি থেকে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। প্রশ্নের বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।