পশ্চিমবঙ্গের তরাই অঞ্চলের মাটি এবং উপকূলীয় লবণাক্ত মাটি ?

পশ্চিমবঙ্গের তরাই অঞ্চলের মাটি এবং উপকূলীয় লবণাক্ত মাটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?

0
পশ্চিমবঙ্গের তরাই অঞ্চলের মাটি এবং উপকূলীয় লবণাক্ত মাটির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি তারা অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে।পশ্চিমবঙ্গের তরাই অঞ্চলের মাটি এবং উপকূলীয় লবণাক্ত মাটি এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের তরাই অঞ্চলের মাটি:

অবস্থান: হিমালয় পর্বতের পাদদেশে পশ্চিমবঙ্গের তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চলে অর্থাৎ দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার হিমালয় পর্বতের পাদদেশীয় অঞ্চলে এই ধরনের মাটি দেখা যায়।

উৎপত্তি: দার্জিলিং হিমালয়ের ক্ষয়জাত পদার্থ নদী দ্বারা বাহিত হয়ে পর্বতের পাদদেশে সজ্জিত হয়ে এই প্রকার মৃত্তিকার সৃষ্টি করে।

বৈশিষ্ট্য:

  1. এটি একধরনের অপরিণত মাটি।
  2. এই মাটিতে প্রচুর পরিমাণে নুড়ি, কাঁকর, বালি প্রভৃতি থাকে।
  3. এতে নবীন পলি মাটির প্রাধান্য বেশি।
  4. এতে মোটা বালি আলগা অবস্থায় থাকে।
  5. এই মাটি বালুকাময়-দোঁয়াশ প্রকৃতির।
  6. এখানে গভীর বনভূমি থাকায় মাটিতে প্রচুর পরিমাণে জৈব পদার্থ থাকে।
  7. এই মাটির রঙ কালো।
  8. অতিরিক্ত বৃষ্টি কারণে মাটিতে জলের পরিমাণ বেশি থাকে বলে মাটি আর্দ্র ও স্যাঁতসেঁতে প্রকৃতির।

স্বাভাবিক উদ্ভিদ: এই প্রকার মৃত্তিকা অঞ্চলে শাল, সেগুন, শিরীষ, গর্জন, টুন, গামার, জারুল, শিশু, বাশ, বেত প্রভৃতি উদ্ভিদ জন্মায় ।

ফসল: চা, ধান, তামাক ও ফল চাষ এই মাটিতে ভালো হয়।

পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় লবণাক্ত বা লোনা মাটি:

অবস্থান: দক্ষিণ 24 পরগণার সুন্দরবন অঞ্চল এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূল অঞ্চলে কাঁথি উপকূলে সাধারণত এই মাটি দেখা যায়।

উৎপত্তি: সমুদ্র তরঙ্গ ও সমুদ্রের জোয়ার ভাটার সময় সমুদ্রের লবণাক্ত জলে এই মাটি ভিজে থাকে বলে এই মাটি লবণাক্ত। সমুদ্র তরঙ্গ এবং নদীর পলল সঞ্জয় কার্যের ফলে মূলত এই মাটির উৎপত্তি ঘটেছে।

বৈশিষ্ট্য:

  1. সাধারণত সামুদ্রিক জোয়ারের লবণাক্ত জলে এই অঞ্চলগুলি হয় বলে এই প্রকার মাটি লবণাক্ত প্রকৃতির।
  2. এটি এক ধরনের অপরিণত মাটি।
  3. এই মাটিতে সূক্ষ্ম কাদাকণা, পলিকণা প্রভৃতি থাকে।
  4. মৃত্তিকার কণাগুলি খুব সূক্ষ্ম বলে এই মাটি আঠালো প্রকৃতির হয়।
  5. এই মাটি আঠালো প্রকৃতির বলে জমাট অবস্থায় থাকে এবং এজন্য মাটির ভেতরে বায়ু ঠিক মতো চলাচল করতে পারে না। এজন্য এই মাটিতে জন্মানো অধিকাংশ গাছের শ্বাসমূল থাকে।
  6. এই মাটি লবণাক্ত ও ক্ষারকীয় প্রকৃতির।
  7. এই মাটি অত্যন্ত কম উর্বর।
  8. এই মাটিতে চাষাবাদ বিশেষ হয় না।

স্বাভাবিক উদ্ভিদ: সুন্দরী, গরান, কেওড়া, হেতাল প্রভৃতি ম্যানগ্রোড জাতীয় বৃক্ষ ভালো জন্মায়। এছাড়া নারকেল, সুপারি প্রভৃতি বৃক্ষ জন্মায়।

ফসল: ধান, তরমুজ, কাঁচালঙ্কা, সূর্যমুখী, উচ্ছে প্রভৃতি ফসল এই মাটিতে চাষ করা হয়।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। বিষয়টি নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য বা পরে অধ্যায়ন করার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।