ক্ষয়,অপসারণ,সঞ্চয় দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ ?

0
বায়ুর কাজ ক্ষয়,অপসারণ,সঞ্চয় দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ সমূহ বর্ণনা করো ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই উপযোগী এবং এই প্রশ্নটি তারা গুরত্ব সহকারে অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। বায়ুর কাজ ক্ষয়,অপসারণ,সঞ্চয় দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

বায়ুর কাজ ক্ষয়,অপসারণ,সঞ্চয় দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ সমূহ বর্ণনা করো ?

উপকূল অঞ্চলে বায়ুর কার্যের প্রাধান্যের কারণ: তোমরা জানো যে, শুধুমাত্র মরু অঞ্চলে বায়ুর কার্য হয় না। সমুদ্রের তরা বারবার উপকূলে আছড়ে পড়েও সমুদ্রের পাড় ভেঙে যায় ও পরবর্তীকালে সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বালিকণায় পরিণত হয়। এই বালি উপকূলের কাছেই স্তূপের আকারে সজ্জিত হতে দেখা যায়। উন্মুক্ত সমুদ্রের বায়ু খুব বেগে আসে বলে এখানে বায়ুর কার্যে নানা বালির ঢিবি দেখা যায়। তোমরা দিঘা বেড়াতে গেলে এরকম বালির পাহাড় দেখতে পাবে।

বালুকণা সৃষ্টির ধারণা: এখন আমাদের জানা দরকার মরুভূমি ও উপকূল অঞ্চলে এত বালি এলো কোথা থেকে। কীভাবে সৃষ্টি হলো এই বালুকণা? –মরু অঞ্চলে দৈনিক ও বার্ষিক উয়তার পার্থক্য খুব বেশি। একে উয়তার প্রসর বলে। ফলে শিলা সহজেই প্রসারিত ও সংকুচিত হয়। শিলা ভেঙে যায়। পরে ও আরও পরে অতিসূক্ষ্ম কণায় পরিণত হয়। সৃষ্টি হয় বালুকণার। বালুকণাগুলির ব্যাস 0.2 মিলিমিটার থেকে 2 মিলিমিটারের হয়। অর্থাৎ বালি যেমন ক্ষুদ্র হয়, তেমনি প্রস্তর কণাময়ও থাকে। কোনো কোনো মরুভূমি এরূপ বালি দ্বারা গঠিত। কোনো মরুভূমি বা প্রস্তরময়। এগুলিও একসময় বালিময় হবে।

বায়ুর কার্যের পদ্ধতি: শুষ্ক মরু অঞ্চলে বায়ু প্রধান প্রাকৃতিক শক্তি। এখানে বায়ুর তিন ধরনের কাজ দেখা যায়। যথা- ক্ষয়সাধন,অপসারণ সঞ্চয়

ক্ষয়সাধন:

মরু অঞ্চলে বায়ুর প্রধান কাজ ক্ষয়সাধন। ক্ষয়সাধন তিন পদ্ধতিতে ঘটে। এগুলি হলো- 

  1. অবঘর্ষ: মরু অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রস্তরখণ্ড, বালুকা বাতাসে বয়ে যায়। বহু বছর ধরে এই প্রবাহ চলতে থাকে। এই প্রস্তরখণ্ডের ঘর্ষণে শিলাস্তর ক্ষয় হয়। এই ক্ষয় অবঘর্ষ ক্ষয়। এই ক্ষয়েই ভেন্টিফ্যাক্ট, ড্রেইকান্টার, ইয়ারদাঙ, জিউগেন, গৌর প্রভৃতি ভূমিরূপ তৈরি হয়। 
  2. ঘর্ষণ: মরু অঞ্চলে বায়ুর ধাক্কায় বায়ুবাহিত প্রস্তরখণ্ডগুলির নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ফলে বড়ো প্রস্তরখণ্ডগুলি ভেঙে ক্ষুদ্র বালিকণায় পরিণত হয়। এটিই ঘর্ষণ ক্ষয়। 
  3. অপসারণ: বায়ু একস্থান থেকে অন্য স্থানে, দূরে, বালিকণাকে উড়িয়ে নিয়ে যায়। একে অপসারণ বলে। অপসারণে লক্ষ লক্ষ টন বালি উড়ে যায়। এরকম ধূলিঝড়কে সাহারায় বলে সাইমুম এবং থর মরুভূমিতে বলে ‘আঁধি’৷ এরূপ ধূলিঝড়ে মরুভূমি প্রসারিত হয়, কৃষিভূমি আবৃত হয় ৷

বহন বা অপসারণ:

বায়ুর গতিতে আলগা শিলাখণ্ড সরে সরে যায়। আবার বৃক্ষশূন্য বলে বায়ু বাধাহীন। ফলে প্রবল বায়ুপ্রবাহে পদার্থের অপসারণ সহজ হয়। এই অপসারণ তিনটি পদ্ধতিতে হয়-

  1. লম্ফদান: মরু ভূপৃষ্ঠে সঞ্চিত বালিকণার ওপর বায়ুবাহিত বালিকণাগুলি আঘাত করে ও লাফাতে লাফাতে অগ্রসর হয়। 
  2. ভাসমান অবস্থায় বহন: সূক্ষ্ম কণা (0-06 মিমি ব্যাস) বায়ুতে ভাসমান অবস্থায় উড়ে যায়।
  3. গড়াতে গড়াতে যাওয়া: বৃহৎ বালিকণাগুলি (50-60 মিমি ব্যাস) বায়ুর টানে ভূপৃষ্ঠের ওপর গড়াতে গড়াতে এগিয়ে যায়।

সঞ্চয় বা অবক্ষেপণ পদ্ধতি:

বায়ুর গতি বাধা পেলেই বহন কার্য কমে গিয়ে সঞ্চয় ঘটতে থাকে। এই সঞ্চয় তিন রকম পদ্ধতিতে ঘটে- 

  1. সেডিমেন্টেশন: এই পদ্ধতিতে বালিকণা ধীরে সঞ্চিত হয় । 
  2. আ্যক্রিশন: এই পদ্ধতিতে লক্ষদান ও গড়াতে গড়াতে কোনো স্থানে বালিকণার সঞ্জয় ঘটে। 
  3. ইনক্রোচমেন্ট: এই পদ্ধতিতে অসমতল ভূপৃষ্ঠে বালিকণার সঞ্চয় ঘটে।

উপরের প্রস্নোধৃত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। এই প্রশ্নের বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।