পশ্চিমবঙ্গে পাট চাষ ভালো হয় কেন ?

0
পশ্চিমবঙ্গে পাট চাষ ভালো হয় কেন ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি তারা অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। পশ্চিমবঙ্গে পাট চাষ ভালো হয় কেন এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পশ্চিমবঙ্গে পাট চাষ ভালো হয় কেন ?

অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ: 

জলবায়ু:

পাট উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়াযুক্ত ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের ফসল। পাটচাষের প্রয়োজনীয় আবহাওয়াগুলি হল

  1. উষ্ণতা: পাট চাষের জন্য 25°-30° উষ্ণতার প্রয়োজন হয়। গাছ বৃদ্ধির সময় উষ্ণতা বেশি হলে পাট লম্বা হয়। লম্বা পাটের দাম বেশি। 
  2. বৃষ্টিপাত: বার্ষিক 150-200 সেমি. বৃষ্টিপাত পাটচাষের পক্ষে আদর্শ। 100 সেমি-র কম বৃষ্টি হলে জলসেচের প্রয়োজন হয়। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে এবং মার্চের শুরুতে বীজ বপনের পর অল্প বৃষ্টিপাতের দরকার হয়। পাট 0.5 থেকে 2 মি. উচ্চতার মধ্যে মাঝে মাঝে প্রচুর বৃষ্টির দরকার হয়। এক নাগাড়ে বৃষ্টিতে পাটের ক্ষতি হয়। 
  3. আর্দ্রতা: ভ্যাপসা গরম এবং বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা 70%-90% পাট চাষের পক্ষে উপকারী। 
  4. আবহাওয়ার অন্যান্য অবস্থা: পর্যাপ্ত সূর্যকিরণ পাটচাষের পক্ষে উপকারী হলেও দীর্ঘদিন খরা, একনাগাড়ে বৃষ্টি মেঘলা আকাশ পাটচাষের পক্ষে ক্ষতিকর। পশ্চিমবঙ্গে পাটচাষের উপরোক্ত সর্বপ্রকার জলবায়ুগত পরিবেশই অনুকূল থাকায় পাট চাষ ভালো হয়।

মৃত্তিকা:

উর্বর নবীন পলিমৃত্তিকা কিংবা দোয়াশ মাটি পাট চাষের পক্ষে আদর্শ। পলি মাটিতে পাটের আঁশ খুব মোটা হয় এবং ফলন বাড়ে। পশ্চিমবঙ্গের নদনদী বিধৌত পলিগঠিত নিম্ন সমতলভূমিতে পাট চা ভালো হয়।

ভূমির প্রকৃতি:

পশ্চিমবঙ্গের নীচু সমভূমিতে পাট চাষ ভালো হয়। নদীর চরা, বিল, প্লাবনভূমি, বদ্বীপ অঞ্চল পাট চাষের পক্ষে আদর্শ।

জলাশয়:

পাট পচিয়ে আঁশ বের করার জন্য পাটচাষের জমির কাছে খাল, বিল, পুকুর বা নদী থাকা দরকার।

অর্থনৈতিক পরিবেশ:

  1. শ্রমিক: পাটচাষে জমি কর্ষণ, বীজ বপন, আগাছা নিড়ানো, পাট গাছ কাটা, ভেজানো, আঁশ ছাড়ানো, শুকানো, গাঁট বন্দীকরণ প্রভৃতি কাজে প্রচুর সুলভ দক্ষ শ্রমিকের দরকার হয় যা পশ্চিমবঙ্গে সহজেই পাওয়া ।
  2. মূলধন: পাটের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য উচ্চ ফলনশীল বীজ, সার, কীটনাশক, জলসেচ প্রভৃতির জন্য বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয়।
  3. পরিবহন: পাট কাটার পর শুকিয়ে যাওয়ার আগেই জলে ভেজানোর জন্য পরিবহনের সুযোগ থাকা দরকার। এছাড়া শুকনো কাঁচাপাট (পাটগাছের বাকল) কারখানায় পৌঁছে দিতে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকা দরকার।
  4. চাহিদা বা বাজার: আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের বিকল্প দ্রব্যের (পলিথিন, নাইলন) ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় পাটের চাহিদা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে চাষিরা পাটের উপযুক্ত দাম পাচ্ছে না বলে উৎসাহ হারাচ্ছে। এই কারণে পাটের স্থিতিশীল লাভজনক দাম থাকা প্রয়োজন।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। বিষয়টি নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য বা পরে অধ্যায়ন করার জন্য সরাসরি পিডিএফ(PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।