নদী প্রবাহের কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ ?

0
নদী প্রবাহের বিভিন্ন প্রবাহ কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ ও তাদের কার্যকারণ সম্পর্কে লেখো ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে খুব গুরত্বপূর্ণ তাই এই প্রশ্নটি ছাত্রছাত্রীরা ভালো ভাবে অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। নদী প্রবাহের বিভিন্ন প্রবাহ কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

নদী প্রবাহের বিভিন্ন প্রবাহ কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ ও তাদের কার্যকারণ সম্পর্কে লেখো ?

উচ্চগতিতে নদীর ক্ষয়জাত বিভিন্ন ভূমিরূপ:

নদীর উচ্চ বা পার্বত্য গতিতে ঢাল ও নদীর স্রোতের বেগ বেশি বলে মূলত বিভিন্ন ক্ষয়জাত ভূমিরূপ গঠিত হয়। এগুলি হলো— 

  1. সংকীর্ণ ‘V’ আকৃতির উপত্যকা: পার্বত্য অঞ্চলে তীব্র স্রোতের বেগের জন্য নদী প্রবল বেগে সোজা নীচের দিকে নেমে আসে। তীব্র ঢাল বলে নদীর বেগ ও বহনক্ষমতা বেশি হয়। নদীবাহিত প্রচুর বড়ো বড়ো প্রস্তরখণ্ড ধর্ষণের দ্বারা নদীখাতকে নীচের দিকে ক্ষয় করে। ফলে নদীখাত গভীর হয়। নদীর পার্শ্বদেশ খাড়া পাথরে গঠিত বলে ক্ষয় কম হয়। ফলে নদীখাত সংকীর্ণ হয়। এরূপ প্রবল নিম্নক্ষয়ের ফলে খাড়া তীরভাগ ও গভীর সংকীর্ণ নদী উপত্যকা ইংরেজি ‘V’ অক্ষরের মতো হয় ।
  2. শৃঙ্খলিত শৈলশিরা: ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকায় নদী এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হওয়ার সময় উপত্যকা বাঁকের একটি অংশ উভয় দিক থেকে উত্তল বাঁকে নেমে আসে। উপত্যকা বাঁকের ওই অংশটি নদীর ঊর্ধ্ব অংশকে দৃষ্টির আড়ালে রাখে। তখন মনে হয় দু-পাশ থেকে পাহাড়গুলি উপত্যকায় নেমে এসে পরস্পর যুক্ত হয়েছে। এরূপ অভিক্ষিপ্তাংশগুলিকে শৃঙ্খলিত শৈলশিরা বলে। এগুলি কুমিরের দাঁতের মতো বিন্যস্ত থাকায় নদী আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয়।
  3. গিরিখাত: কঠিন শিলায় গঠিত পার্বত্য অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী অত্যন্ত সরু ও গভীর উপত্যকা সৃষ্টি করে। এরূপ উপত্যকা ইংরেজি ।’ অক্ষরের মতো হয়। এরূপ উপত্যকাকে গিরিখাত বলে।
  4.  ক্যানিয়ন: কঠিন শিলায় গঠিত শুল্ক পার্বত্য অঞ্চলে নদী প্রবাহিত হলে নদী, অত্যন্ত সংকীর্ণ ও গভীর উপত্যকা গঠন করে। এরূপ গিরিখাতকেই শুষ্ক অঞ্চলে ক্যানিয়ন বলে। কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়ন।
  5. খরস্রোত বা র‍্যাপিডস: নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা উল্লম্বভাবে পরপর থাকলে কোমল শিলা দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কয়েকটি ধাপের সৃষ্টি করে। এই ধাপগুলির ওপর দিয়ে নদী প্রবাহিত হলে তাকে খরস্রোত বলে। যেমন- হিমালয়ের অলকানন্দা নদীতে খরস্রোত বা র‍্যাপিডস দেখা যায়।
  6. জলপ্রপাত: নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা আড়াআড়িভাবে বা সমান্তরালভাবে অবস্থান করলে, নদী তার জলধারার সাহায্যে কঠিন শিলার তুলনায় নরম শিলাকে দ্রুত ক্ষয় করে, পরবর্তীকালে কঠিন ও নরম শিলার মধ্যে একটি ব্যবধানের সৃষ্টি হয়। এই ব্যবধানের জন্য নদীর জলধারা কঠিন শিলার ওপর থেকে নীচে ক্ষয়প্রাপ্ত কোমল শিলার ওপর উল্লম্বভাবে পতিত হয়, আর এই উল্লম্ব পতিত জলধারাকেই জলপ্রপাত বলে।
  7. প্রপাতকূপ: জলপ্রপাতের পাদদেশে বা নীচে সৃষ্ট বর্তুলাকার গর্তকে প্রপাতকূপ বলে। জলপ্রপাত বাহিত প্রস্তরখণ্ডের আঘাত ও ঘর্ষণে প্রপাতকূপ গড়ে ওঠে। যেমন—সুবর্ণরেখার ওপর হুডু জলপ্রপাতের নীচে প্রপাতকূপ দেখা যায়।
  8. মন্থকূপ: পার্বত্য প্রবাহে নদীপথ অসমান থাকে। সুতরাং অসমান নদীপথে জল পাক খেতে খেতে অগ্রসর হয় এবং জলের ঘূর্ণি গর্তে পাথরের ঘূর্ণি এবং সেইসঙ্গে জলবাহিত নুড়ি, প্রস্তরখণ্ডগুলি নদীখাতে মন্থনকার্যের দ্বারা বৃত্তাকার গর্তের সৃষ্টি করে। এরূপ উল্লম্ব গর্তগুলিকে মন্থকূপ বা পটহোল বলে। অসংখ্য পটহোল একসঙ্গে গড়ে উঠলে তাকে পটহোল কলোনি বলে।

উপরোক্ত প্রশ্নটি থেকে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। প্রশ্নের বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।