আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশ্নটি তারা অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই পরীক্ষায় ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। খনিজ তেলের ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
খনিজ তেলের ব্যবহার ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব লেখো ?
খনিজ তেলের ব্যবহার ও গুরুত্ব:
বর্তমানে যন্ত্র নির্ভর সভ্যতার অগ্রগতির মূলে খনিজ তেল বা পেট্রোলিয়াম। পেট্রোলিয়ামের ব্যবহার বহুবিধ। একে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে খুব সহজে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়। এর প্রধান ব্যবহারগুলি নিম্নরূপ
- পরিবহন: খনিজ তেল ছাড়া আধুনিক যান্ত্রিক পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ অচল। উত্তোলিত খনিজ তেলের 50% পরিবহনের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পরিবহনে খনিজ তেল যে ভাবে ব্যবহৃত হয় তা হল
- স্থলপথে বাস, মোটরগাড়ি, ট্রাক প্রভৃতি এবং জলপথে জাহাজ, ট্রলার, যন্ত্রচালিত নৌকো প্রভৃতি চালাতে পেট্রোল ও ডিজেল অপরিহার্য।
- আকাশপথে বিমান চালাতে প্রয়োজন হয় গ্যাসোলিন।
- রেলপথে রেল ইঞ্জিন চালাতে ডিজেল ব্যবহার করা হয়।
- পেট্রো-রসায়ন শিল্প: পেট্রো-রসায়ন শিল্পের প্রধান উপকরণ বা কাঁচামাল হল পেট্রোলিয়ামের বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য। যেমন – ন্যাপথা, প্যারাফিন, অ্যাসফল্ট প্রভৃতি, পেট্রো-রসায়ন শিল্পে কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়। নাইলন, পলিয়েস্টার প্রভৃতি কৃত্রিম তত্ত্ব দ্বারা তৈরি জামাকাপড়, ব্যাগ, কৃত্রিম রবার, টায়ার, টিউব, মোম, ভেসলিন, রাসায়নিক সার, কীটনাশক পদার্থ, রং, ওষুধ তৈরি প্রভৃতি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্য সবগুলিই প্রস্তুত হয় খনিজ তেলের উপজাত দ্রব্য থেকে।
- তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন: কয়লাহীন অঞ্চলে ডিজেল ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠতে দেখা যায়। এই ধরনের শক্তি বিশ্বের মোট বিদ্যুৎ শক্তির 6% উৎপাদিত হয়।
- শিল্প কারখানা: বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও মেশিনপত্র চালাতে পেট্রোল, ডিজেল বা কেরোসিন ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ঘর্ষণজনিত ক্ষয়রোধ, মেরামতি, কার্যকারিতা ও আয়ু বৃদ্ধির জন্য, যানবাহন, কলকারখানার যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ, কৃষি ও সামরিক সরঞ্জামে পেট্রোলিয়ামজাত মবিল, গ্রিজ প্রভৃতি পিচ্ছিলকারক পদার্থ নিয়মিত ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
- গৃহস্থালির কাজ:
- বিদ্যুৎহীন গ্রামগঞ্জের হ্যারিকেন, লণ্ঠন, হ্যাজাক, কুপির মাধ্যমে জ্বালাতে, স্টোভে রান্নার কাজে কেরোসিন ব্যবহৃত হয়।
- শীতপ্রধান দেশে ভারী তেল ঘর উয় রাখার জন্য চুল্লিপাত্রে জ্বালানিরূপে ব্যবহৃত হয়।
- সস্তা ও দূষণহীন প্রোপেন, বুটেন গ্যাস দ্বারা রান্না করা হয়, আলো জ্বালানো হয়।
- সামরিক কাজ: আধুনিক যুদ্ধে ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া গাড়ি, যুদ্ধ বিমান, যুদ্ধ জাহাজ, সাবমেরিনের জ্বালানি, অস্ত্রশস্ত্র, বিস্ফোরক তৈরির কাঁচামাল হিসাবে খনিজ তেল ও তার রাসায়নিক উপজাত দ্রব্য ব্যবহৃত হয়।
- কৃষি কাজ: ট্র্যাক্টর, হারভেস্টর, রিপার, ঝাড়াই মেশিন, পাম্প মেশিনের জ্বালানি তেলরূপে ডিজেল ব্যবহৃত হয়। আবার রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ওষুধ খনিজ তেলের রাসায়নিক উপজাত দ্রব্য থেকে উৎপাদন করা হয়।
- উপজাত দ্রব্য উৎপাদন: তৈলকূপে উত্তোলিত ক্রুডওয়েল সালফার, নাইট্রোজেন, বালি, কাদা, জল মিশ্রিত ও ব্যবহার অযোগ্য। এজন্য শোধনাগারে অণুবিভাজক পদ্ধতিতে পরিশোধনকালে 1 ব্যারেল ( 191 লিটার) ক্রুডওয়েল থেকে 91% মূল দ্রব্য ও 9% উপজাত দ্রব্য সংগৃহীত হয়।
- উপজাত দ্রব্যের ব্যবহার:
- বিটুমেন, পিচ, আলকাতরা দ্বারা পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়, ছাদকে জল নিরোধক করা হয়।
- মোম দ্বারা মোমবাতি ও সিলমোহর তৈরি করা হয়। পালিশ প্রস্তুত করা হয়।
- বেনজল বিকল্প জ্বালানি ৰূপে যানবাহন চালাতে ব্যবহৃত হয়।
উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। প্রশ্নের বিষয়টি নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য বা পরে অধ্যায়ন করার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।