বায়ুমন্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন ?

0
বায়ুমন্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন সম্পর্কে আলোচনা করো ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই উপযোগী এবং এই প্রশ্নটি তারা গুরত্ব সহকারে অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। বায়ুমন্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

বায়ুমন্ডলের তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন সম্পর্কে আলোচনা করো ?

সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বা ইনসোলেমান: সূর্য থেকে বিকিরিত রশ্মি অনবরত আমাদের ভূপৃষ্ঠে আসে । একে ইনসোলেশান বা সূর্য রশ্মির তাপীয় ফল বলে। সূর্যের উত্তাপের 200 কোটি ভাগের মাত্র 1 ভাগ উত্তাপ পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়। এই সূর্যরশ্মির তাপীয় ফলের শতকরা 34 ভাগ বায়ুমণ্ডলের মেঘ, ধূলিকণা, বায়বীয় কণা প্রভৃতিতে প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরেযায়। এই উত্তাপ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করতে পারেনা,একে পৃথিবীর অ্যালবেডো বলে। আসলে পৃথিবী থেকেপ্রতিফলিত হয়ে ফিরে যাওয়া সূর্যকিরণ ও পৃথিবীতে আগত সূর্যকিরণ,দুইয়ের অনুপাত যা শতকরাতে প্রকাশ করাহয়, তাকে অ্যালবেডো বলে। পৃথিবীতে আগত সৌরকিরণের পরিমাণকে 100 শতাংশ ধরে বিজ্ঞানী HJ Kritchfield-এর মতে-পৃথিবীর গড় অ্যালবেডো 34 শতাংশ। বাকি 66 শতাংশ ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে। জলরাশির ওপর সূর্যের লম্ব রশ্মি পড়লে অ্যালবেডোর পরিমাণ কম হয় এবং তির্যক রশ্মি পড়লে এর পরিমাণ বেশি হয় ।

তাপের সমতা: সৃষ্টির সময় থেকেই পৃথিবী অবিরামভাবে সূর্যের তাপ পেয়ে আসছে। আমরা পৃথিবীতে যে পরিমাণ সৌরকিরণ আসে তার প্রায় 34 শতাংশ অ্যালবেডোরূপে মহাশূন্যে ফিরে যায় এবং বাদবাকি প্রায় 66 শতাংশই কার্যকরী সৌরকিরণরূপে পৃথিবীর কাজে লাগে অর্থাৎ, এই ভূপৃষ্ঠ, বায়ুমণ্ডল, মেঘপুঞ্জ ইত্যাদির দ্বারা বিশোষণ প্রক্রিয়া (Process Of Absorption)-র মাধ্যমে তাপ (Heat)-এ পরিণত হয়। এইভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সূর্য থেকে প্রতি মিনিটে প্রতি বর্গসেন্টিমিটার ক্ষেত্রে 0-30 ক্যালোরি হারে তাপ লাভ বা গ্রহণ করে চলেছে। কিন্তু তবুও পৃথিবী আগের মতোই বাসযোগ্য আছে। তাপবৃদ্ধি ঘটছে না, তাপহ্রাসও হচ্ছে না, অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে পৃথিবীর গড় বার্ষিক তাপের পরিমাণ একই থাকছে –কেন?

খোলা কলের তলায় ভরা বালতি রাখলে, জল পড়লেও সেই বালতিতে যেমন জলের পরিমাণ বাড়তে পারে না, উপচে পড়ে যায়, গ্রহরূপে সমগ্র পৃথিবীর তাপস্থিতির ক্ষেত্রেও তাই। দিবাভাগে কার্যকরী সৌরকিরণ থেকে পৃথিবীর যে পরিমাণ তাপ ‘আয়’ হয়, সেই আয়ের প্রায় 100 শতাংশই পুনর্নবীকরণের মাধ্যমে ব্যয় হয়ে যায়। অতি সামান্য পরিমাণ তাপই জীবাশ্ম জ্বালানিৰূপে থেকে যায়। এইভাবে সমগ্র পৃথিবীর গড় তাপের আয়-ব্যয়ে সমতা বজায় থাকে।

বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার পদ্ধতি:

বায়ুমণ্ডল কয়েকটি পদ্ধতিতে উত্তপ্ত হয়। এগুলি হলো-

  1. পরিবহণ পদ্ধতি: যে পদ্ধতিতে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন উষ্ণ বায়ু তার সংস্পর্শের শীতলবায়ুতে তাপ পরিহরণ করতে থাকে এবং শীতল বায়ুস্তরের উষ্ণতা সমান না হওয়া পর্যন্ত এই পরিবহণ চলতে থাকে, তাকে পরিবহণ পদ্ধতি বলে।
  2. পরিচলন পদ্ধতি: যে পদ্ধতিতে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন উষ্ণ বায়ু লঘু, প্রসারিত ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে এবং ওপরের শীতল, ভারী বায়ু নীচে নামে এবং বায়ু ও উষ্ণ-হালকা হয়ে ওপরে উঠে। এইভাবে বায়ু চক্রাকারে ও উল্লম্ব সঞ্চালনে উত্তপ্ত হয়, তাকে পরিচলন পদ্ধতি বলে।
  3. বিকিরণ পদ্ধতি: সূর্য থেকে আগত তাপ ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে যে পদ্ধতিতে উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠের তাপ বিকিরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুকে উত্তপ্ত করে, তাকে বিকিরণ পদ্ধতি বলে।
  4. বায়ুপ্রবাহের দ্বারা তাপের অনুভূমিক সঞ্চালন: বায়ু ওপরে উঠলে প্রসারিত হয়, ঘনত্ব কমে যায় ও শীতল হয়। আবার বায়ু নীচে নামলে সংকুচিত হয়, ঘনত্ব বাড়ে ও উয়ু হয়। এইভাবে বাইরে থেকে তাপের আগমন ছাড়াই বায়ুর প্রসারণ ও সংকোচনের কারণে উয়তার পরিবর্তনকে রুদ্ধতাপীয় পরিবর্তন বলে।

উপরের প্রস্নোধৃত অংশ থেকে কোনো আক্ষেপ থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি পছন্দ হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। এই প্রশ্নের বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।