বহুমুখী নদী উপত্যকা ?

0
বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনা কি?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা শিখবো ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন বিষয় যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য খুবই উপযোগী। ছাত্রছাত্রীরা বিষয়টি অধ্যায়ন করলে তারা সহজেই পরীক্ষায় খুব ভালো নম্বর অর্যন করতে পারবে। বহুমুখী নদী উপত্যকা সম্পর্কে বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনা কি?

সংজ্ঞাঃ যে প্রকল্পে বিভিন্ন গঠনমূলক উদ্দেশ্যে নদীতে বাঁধ দিয়ে বাঁধের পশ্চাতে জল সঞ্চিত করে আবশ্যকমত তা কৃষিজমিতে সেচের জন্য খাল মাধ্যমে প্রেরণ করে কৃষিকার্যের প্রসার , শিল্প বিকাশের জন্য বাঁধের পশ্চাতে সঞ্চিত জল থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন , বন্যা নিয়ন্ত্রণ , মৎস্যচাষ , খাল মাধ্যমে নৌ – চলাচল , ভূমি ও বন সংরক্ষণ , জলক্রীড়া ও আমােদ – প্রমােদ প্রভৃতি বাস্তবায়িত করা হয় , তাকে বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনা বা বহু উদ্দেশ্যমূলক নদী উপত্যকা পরিকল্পনা বলে ।

উদ্দেশ্যঃ কিছুদিন পূর্বেও নদী থেকে কেবল জলসেচ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হত । কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে নদীকে বিভিন্ন কল্যাণকর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে । নদীর ধ্বংস ক্ষমতাকে বিভিন্ন গঠনমূলক কার্যে রূপায়িত করিয়া তাহার মাধ্যমে নদী অববাহিকার সর্বাঙ্গীণ উন্নতির দিকে লক্ষ্য দেওয়াই হল বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনার উদ্দেশ্য । এগুলি নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল –

  • জলসেচঃ বাঁধের পিছনে নির্মিত জলাধার থেকে খাল কেটে সংলগ্ন কৃষিজমিতে সারাবছর জলসেচের ব্যবস্থা করা এই প্রকল্পের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ।
  • জলবিদ্যুৎ উৎপাদনঃ এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে বাঁধের মাধ্যমে কৃত্রিম জলপ্রপাত সৃষ্টি করে তার সাহায্যে টারবাইন ঘুরিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় । 
  • বন্যা নিয়ন্ত্রণঃ বর্ষার অতিরিক্ত জল জলাধার ও খালের মধ্যে সঞ্চয় করে রেখে নদী উপত্যকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা বহুমুখী নদী পরিকল্পনার অন্যতম উদ্দেশ্য । 
  • মৎস্যচাষঃ অভ্যন্তরীণ মৎসের চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে জলাধারগুলিতে মৎস্যচাষ করা হয় ।
  • পরিবহণঃ এই প্রকল্পে নদী ও খালপথকে পরিবহণ কার্যে ব্যবহার করা হয় ।
  • জল সরবরাহঃ শিল্পের প্রয়ােজনীয় জল সরবরাহ করা ও জলাশয়ের জল পরিস্তুত করে পানীয় জল সরবরাহ করা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ।
  • ভূমিক্ষয় রােধঃ এই প্রকল্পে জলাধার ও খালের পাড়ে বৃক্ষরােপণ করে ভূমিক্ষয় নিবারণের ব্যবস্থা করা হয় ।
  • বিনােদনঃ বহুমুখী নদী পরিকল্পনায় সংশ্লিষ্ট জলাধারগুলির সৌন্দর্যায়ন ঘটিয়ে পর্যটন কেন্দ্ররূপে গড়ে তােলা ।
  • সেতুঃ নদী পরিকল্পনার বাঁধগুলি সেতু হিসেবে কাজে লাগানাের চেষ্টা করা হয় ।
  • জনস্বাস্থ্যঃ বহুমুখী নদী প্রকল্পে ম্যালেরিয়া ও জলবাহিত রােগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতির মধ্য দিয়ে স্থানীয় জনস্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা হয় ।
  • পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনঃ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট জলাশয়গুলি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে । তাই এই সমস্ত অঞ্চলে পর্যটন কেন্দ্রও গড়ে ওঠে ।

উদাহরণঃ বর্তমানে ভারতে বেশ কয়েকটি নদীতে এইরূপ বহুমুখী নদী – উপত্যকা পরিকল্পনার কাজ শেষ হয়েছে এবং অনেকগুলিতে কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে । নিম্নে ভারতের কয়েকটি উল্লেখযােগ্য নদী – উপত্যকা পরিকল্পনা সম্বন্ধে আলােচনা করা হল –

  • ১. দামােদর উপত্যকা পরিকল্পনা [Read more…]
  • ২. ময়ুরাক্ষী উপত্যকা পরিকল্পনা [Read more…]
  • ৩. গঙ্গা উপত্যকা পরিকল্পনা বা ফরাক্কা প্রকল্প [Read more…]
  • ৪. ভাকরা – নাঙ্গাল পরিকল্পনা [Read more…]
  • ৫. মহানদী উপত্যকা পরিকল্পনা বা হীরাকুঁদ প্রকল্প [Read more…]
  • উপরিউক্ত নদী উপত্যকা পরিকল্পনাগুলি সম্পর্কে পরবর্তী পোস্টগুলিতে আলাদা আলাদাভাবে বিস্তারিত আলোচনা করা হল ।

উপরোক্ত বিষয়টি নিয়ে কোনো বিস্ময় থাকলে নীচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি আপনার কাছে সাহায্য দায়ক মনে হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করে তাদের কেও সাহায্য করুন। বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।