নামকরণঃ উনবিংশ শতকের ফরাসী গণিতবিদ ও বিজ্ঞানী গুস্তাভ-গাসপার্ড ডি কোরিওলিস (Gustave-Gaspard De Coriolis, 1792-1843) সর্বপ্রথম ঘূর্ণনসাপেক্ষে গতিশীল বস্তুর দিক বিক্ষেপকারী এইপ্রকার বলের বিষয়ে আলোকপাত করেন বলে তাঁর নামানুসারে এই বলের নাম কোরিওলিস বল রাখা হয়েছে ।
সংজ্ঞাঃ পৃথিবীর আবর্তনজনিত ঘূর্ণনের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠস্থ যে কোনো স্বচ্ছন্দ, গতিশীল বস্তুর উপর একধরনের বল কাজ করে, যা উক্ত বস্তুর দিক বিক্ষেপ ঘটায় । এই বলকে কোরিওলিস বল (Coriolis Force) বলে ।
ধারণার প্রেক্ষাপটঃ কোরিওলিস বল বলতে পদার্থবিদ্যায় গতিশীল বস্তুসমূহের আপাত বিচ্যুতিকে বোঝায় । বস্তুসমূহের গতিকে এক্ষেত্রে একটি ঘূর্ণায়মান কাঠামোর সাপেক্ষে বর্ণনা করা হয় । যেমন – কাঠামোটিতে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘূর্ণনে বস্তুর গতিবিক্ষেপ বামদিকে এবং ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘূর্ণনে ডানদিকে বিচ্যুতি ঘটে । বিজ্ঞানী কোরিওলিস এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে সর্বপ্রথম ঘূর্ণনের ফলে সৃষ্ট গতিশীল বস্তুর গতিবিক্ষেপসংক্রান্ত ধারণাটি গাণিতিকভাবে প্রকাশ করেন, যা বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগ থেকেই আবহবিদ্যায় পৃথিবীর ঘূর্ণনের সাপেক্ষে গতিশীল বস্তুর গতিবিক্ষেপসংক্রান্ত আলোচনার ভিত্তি হিসাবে কোরিওলিস বল নামে ব্যবহৃত হতে থাকে ।
ব্যাখ্যাঃ কোরিওলিস বল পৃথিবীর ঘূর্ণন ও বস্তুর জড়তার কারণে ক্রিয়াশীল হয় । সমগ্র পৃথিবীর উপর কোরিওলিস বলের প্রভাব খুব সামান্যই অনুভূত হলেও গতিশীল বস্তু তথা – বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতির গতিবিক্ষেপের ক্ষেত্রে এই বলের প্রভাব বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় । এই অনুভূমিক বিক্ষেপ নিরক্ষরেখায় সর্বনিম্ন এবং মেরুদ্বয়ের নিকট সর্বোচ্চ হয় । এর কারণ উত্তর বা দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে গতিপ্রাপ্ত বস্তু যতই মেরুর নিকটবর্তী হতে থাকে ততই অক্ষাংশ বৃত্তের ব্যাসার্ধ পরিবর্তনের হারও বৃদ্ধি পেতে থাকে ।
বৈশিষ্ট্যঃ কোরিওলিস বল – এর বৈশিষ্ট্যগুলি হলো নিম্নরূপ –
ক) এটি সর্বদা বায়ুপ্রবাহের অনুভূমিক দিকের সমকোণে ক্রিয়াশীল হয় ।
খ) এই বলের পরিমাণ পৃথিবীর সর্বত্র সমান নয়, বিভিন্ন অক্ষাংশে এর মান বিভিন্ন মাত্রার; যথা – নিরক্ষীয় অঞ্চলে তথা ০° অক্ষাংশে ০%, ৩০° – ৫০° অক্ষাংশে ৫০%, ৬০° – ৮০° অক্ষাংশে ৮৫% – ৯০% এবং মেরু অঞ্চলে তথা ৯০° অক্ষাংশে ১০০% ।
Sir bayuprobaher songe coriolis force koto digree cone e kaj kore?