বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের প্রক্রিয়া কি কি?

0

বায়ুপ্রবাহ দ্বারা শিলাস্তূপ তথা ভূপৃষ্ঠের ক্ষয়কে বায়ুর ক্ষয়কার্য বলে এবং যে পদ্ধতিগুলির মধ্য দিয়ে বায়ুপ্রবাহের এই কার্য সম্পন্ন হয়,তাদের বায়ুর ক্ষয়কার্যের পদ্ধতি বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের পদ্ধতি – অপসারণ (Deflation) ,অবঘর্ষ (Abrasion) ও ঘর্ষণ (Attrition) প্রক্রিয়া বলা হয় । বায়ুপ্রবাহের প্রধান কাজ ক্ষয়সাধন করা । শুষ্ক প্রায় উদ্ভিদশূন্য মরু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহ সহজেই বালুকণাকে উপরে তুলে উড়িয়ে নিয়ে যায় । ভূমিভাগ বা মাটির কাছাকাছি বায়ু প্রবাহের গতিবেগ কম হয় । কারণ ভূমিভাগের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে কিছু বায়ুপ্রবাহের শক্তি কিছুটা কমে যায় । আবার মাটি থেকে বেশি উপরে বায়ুতে বালুর পরিমাণ কমে যাওয়ার দরুন বায়ু প্রবাহের ক্ষয় করার শক্তি কম হয় । তাই এর মাঝামাঝি জায়গায় অর্থাৎ, মাটি থেকে মিটার খানেক উপরে বায়ুপ্রবাহের ক্ষয় করার ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি হয় । কারণ এই অংশে একদিকে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ থাকে বেশি , আবার অপরদিকে বায়ুতে বালুকণার পরিমাণ ও থাকে বেশি । সেই জন্য ভূমির কিছু উপরে দন্ডায়মান পাথরের স্তূপ বা শিলাময় ভূমির ক্ষয় বেশি হয় । এর ফলে বৈচিত্রময় বিভিন্নপ্রকার ভূমিরূপের সৃষ্টি হয় । বায়ুপ্রবাহের ক্ষয়কার্যের প্রক্রিয়া মূলত তিন প্রকার । যথা –
(ক) অপসারণ (Deflation): মরু অঞ্চলে প্রবল গতিসম্পন্ন বায়ুপ্রবাহ শিথিল ও আলগা বালুকণাকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে উড়িয়ে নিয়ে যায় । এই প্রক্রিয়াকে বায়ুর অপসারণ প্রক্রিয়া (Deflation) বলে ।
বৈশিষ্ট্যঃ অপসারণ প্রক্রিয়া – র বৈশিষ্ট্যগুলি হলো নিম্নরূপ –
ক) এই প্রক্রিয়ায় ধুলিঝড়ের সময় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে লক্ষ লক্ষ টন বালি অপসারিত হয় । উদাঃ আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির সাইমুম 
খ) এই প্রক্রিয়ায় ভুপৃষ্ঠ অনেক নিচু হয়ে অবনত ভুমি বা গর্তের সৃষ্টি হয় ।
সৃষ্ট ভূমিরুপঃ মরুদ্যান [Read More] , ধান্দ [Read More] , প্লায়া [Read More] প্রভৃতি ।

(খ) অবঘর্ষ (Abrasion): বায়ুতে মিশে যাওয়া সূক্ষ্ম কঠিন বালিকণা প্রবল বায়ুপ্রবাহের সাথে বাহিত হয়ে মরু অঞ্চলে অবস্থিত শিলাখন্ডের গায়ে ধাক্কা খায় । এর ফলে ওই শিলাস্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হয় । এই প্রক্রিয়াকে বায়ুর অবঘর্ষ প্রক্রিয়া (Abrasion) বলে ।
বৈশিষ্ট্যঃ অবঘর্ষ প্রক্রিয়া – র বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ –
ক) এই প্রক্রিয়ায় শিলাখন্ডের গায়ে অসংখ্য আঁচড়কাটা দাগ বা গর্তের সৃষ্টি হয় ।
খ) ভূমি থেকে ১-৩ মিটারের মধ্যে এটি সর্বাধিক কার্যকরী হয় ।
সৃষ্ট ভূমিরূপঃ গৌর [Read More] , ইয়ার্দাং [Read More] , জুইগেন [Read More] , ভেন্টিফ্যাক্ট [Read More] প্রভৃতি ।

(গ) ঘর্ষণ (Attrition): বায়ুমধ্যস্থিত বালিকণা বায়ুপ্রবাহের সাথে বাহিত হওয়ার সময় পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে আরও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় ভেঙে যায় । এই প্রক্রিয়াকে বায়ুর ঘর্ষণ প্রক্রিয়া (Attrition) বলে ।
বৈশিষ্ট্যঃ ঘর্ষণ প্রক্রিয়া – র বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ –
ক) এর ফলে অপেক্ষাকৃত আরও ক্ষুদ্র বালুকণার সৃষ্টি হয় ।
খ) বালুকণার পরিমানের সাথে এটি সমানুপাতিক ।
সৃষ্ট ভূমিরূপঃ আঁচড়কাটা দাঁগযুক্ত শিলাখন্ড ।