প্রস্থ অনুসারে হিমালয়ের শ্রেণীবিভাগ ?

0
প্রস্থ অনুসারে হিমালয়ের শ্রেণীবিভাগ করো ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা এই বিষয়টি ভালো ভাবে অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্যন করতে পারবে। প্রস্থ অনুসারে হিমালয়ের শ্রেণীবিভাগ এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

Advertisement

প্রস্থ অনুসারে হিমালয়ের শ্রেণীবিভাগ করো ?

প্রস্থ অনুসারে হিমালয়ের শ্রেণীবিভাগ মূলত চারপ্রকার । যথা – শিবালিক বা বহিঃহিমালয়,হিমাচল বা অবহিমালয়,হিমাদ্রি বা উচ্চ হিমালয়, ট্রান্স বা টেথিস হিমালয় । নিচে এদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল

  • শিবালিক বা বহিঃহিমালয় (Siwalik or Outer Himalaya) : হিমালয়ের দক্ষিণ প্রান্তে যে সকল ছােট ছােট পাহাড় সারিবদ্ধভাবে পশ্চিম থেকে পূর্বে বিস্তৃত রয়েছে , তাহাই শিবালিক হিমালয় নামে পরিচিত । এই শ্রেণী ১০ কিলোমিটার থেকে ৫০ কিলোমিটার চওড়া এবং এদের উচ্চতা ৬০০ মিটার থেকে ১,৫০০ মিটার । হিমালয় থেকে উদ্ভূত নদীগুলির দ্বারা বাহিত প্রস্তরখণ্ড ও পলিতে ভাজ পড়ে এই পর্বতের সৃষ্টি হয় । শিবালিক পাহাড় শিখরদেশ থেকে উত্তরে ক্রমশঃ নেমে গিয়ে চওড়া উপত্যকায় মিশেছে । এদের ‘ দুন ’ ( Dun ) বলে । এই উপত্যকাগুলি যথেষ্ট উর্বর এবং লােকবসতিও বেশ ঘন । এদের মধ্যে দেরাদুন – উপত্যকা বিশেষ উল্লেখযােগ্য । 
  • হিমাচল বা অবহিমালয় (Himachal or Middle Himalaya): দক্ষিণে শিবালিক পাহাড় ও উত্তরে হিমাদ্রি ( হিমগিরি ) বা উচ্চ হিমালয়ের মধ্যে অবস্থিত ৩০ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলােমিটার প্রশস্ত এবং ২,০০০ থেকে ৩,৩০০ মিটার উচ্চ পর্বতশ্রেণীকে ‘ হিমাচল ’ নামে অভিহিত করা হয় । এই পর্বত অতি প্রাচীন জীবাশ্ম বিহীন রূপান্তরিত শিলাদ্বারা গঠিত । এই অংশে নদীগুলি গভীর খাতের সৃষ্টি করেছে । হিমাচলের চারটি প্রধান পর্বতশ্রেণী হল পিরপঞ্জল ( কাশ্মীর ) , ধাওলাধর বা ধবলাধর ( হিমাচল প্রদেশ ) , নাগটিব্বা ও মুসৌরী ( উত্তরাখণ্ড ) ।
  • হিমাদ্রি (হিমগিরি) বা উচচ হিমালয় (Himadri Or Himgiri Or Great Himalaya): হিমাচল বা অবহিমালয় পর্বতের উত্তর প্রান্তে হিমালয়ের সর্বোচ্চ পর্বতশ্রেণী— হিমাদ্রি বা হিমগিরি অবস্থিত । ইহাদের গড় উচ্চতা ৬,০০০ মিটার হলেও স্থানে স্থানে এটি আরও অনেক উঁচু । এর দক্ষিণ ঢাল এত খাড়া যে একে সহজে অতিক্রম করা যায় না । হিমাদ্রি চিরতুষারাবৃত হিমালয়ের উচ্চ গিরিশৃঙ্গ সমূহ এই পর্বতশ্রেণীর উপরেই অবস্থিত । নেপালে হিমাদ্রির উপর পৃথিবীর সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট ( ৮,৮৪৮ মিঃ ) এবং সিকিম হিমালয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা ( ৮,৫৯৮ মিঃ ) অবস্থিত । দার্জিলিং শহর থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ও তাহার পার্শ্ববর্তী জানাে ও কাব্ৰু গিরিশৃঙ্গ মেঘমুক্ত দিবসে সুন্দর দেখতে পাওয়া যায় । হিমাদ্রির অন্যান্য উচ্চ গিরিশৃঙ্গ হল ধবলগিরি ( ৮,১৭২ মিঃ ) , গৌরীশঙ্কর ( ৭,৩৩২ মিঃ ) , নাজপর্বত ( ৮,১২৬ মিঃ ) , নন্দাদেবী ( ৭,৮১৭ মিঃ ) , মাকালু ( ৮,৪৮১ মিঃ ) , কামেট ( ৭,৭৫৬ মিঃ ) , বদ্রীনাথ ( ৭,১৩৮ মিঃ ) ইত্যাদি । হিমাদ্রি পর্বতশ্রেণী অতি প্রাচীন পাললিক ও রূপান্তরিত শিলা এবং তার মধ্যে অন্তঃপ্রবিষ্ট গ্রানাইট শিলা দ্বারা গঠিত । এই পর্বতশ্রেণী উত্তর – পশ্চিমে নাঙ্গাপর্বতের নিকট এবং উত্তর – পূর্বে সাদিয়ার নিকট চুলের কাটার ন্যায় ( hair pin bend ) বাঁক নিয়েছে ।
  • ট্রান্স বা টেথিস হিমালয় (Trans or Tethys Himalaya): হিমাদ্রি পর্বতশ্রেণী উত্তরে সিন্ধু – সাংপাে উপত্যকা এবং আরও উত্তরে ক্রমশঃ তিব্বত মালভূমিতে গিয়া মিশেছে । এই অংশকে ট্রান্স বা টেথিস হিমালয় বলা হয় । এটি প্রায় ৪০ কিলােমিটার চওড়া এবং জীবাশ্মযুক্ত পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত । ভারতে এটি জম্মু – কাশ্মীর ও হিমাচল প্রদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ । জানসকর পর্বত ট্রান্স – হিমালয়ের প্রধান অংশ । এর সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গ লিওপারগেল ( ৭,৪২০ মিঃ ) শতদ্রু নদীর উত্তরে শিপকিলা গিরিদ্বারের অপরদিকে অবস্থান করিতেছে ।পামীর গ্রন্থি থেকে হিমালয় ব্যতীত অন্যান্য কতকগুলি পর্বতশ্রেণী বিভিন্ন দিকে প্রসারিত হয়েছে । এদের মধ্যে হিন্দুকুশ , কারাকোরাম , কিউনলুন , তিয়েনসান , ট্রান্স – আলাই প্রভৃতি পর্বতশ্রেণী বিশেষ উল্লেখযােগ্য । পূর্ব প্রান্তে সাদিয়ার নিকট হিমালয় পর্বতশ্রেণী বাঁক নিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে ভারত ও মায়ানমারের সীমানার নিকট দিয়ে দক্ষিণে প্রসারিত হয়েছে । ভারতের এই অঞ্চলকে “ পূর্বাচল ’ বলা হয় ।

উপরোক্ত অংশ নিয়ে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি আপনার কোনো সাহায্য হলে আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে তাদের কেও সাহায্য করুন। প্রশ্নটি নিজের কাছে সংরক্ষিত করার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।