শহরের কর্মভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ করো ?

0
শহরের কর্মভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ করো ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি ছাত্রছাত্রীরা অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্যন করতে পারবে। তাই প্রশ্নটি তাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ শহরের কর্মভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

শহরের কর্মভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ করো ?

অবস্থান , পরিপ্রেক্ষিত ও কার্যাবলি — পরস্পর সম্পর্কযুক্ত । এদের কোনােটিই এককভাবে নয় , বরং তিনটির মিলিত কারণেই কোনাে শহর বা নগর গড়ে ওঠে । কোনাে শহরের কার্যাবলি সেই শহরের অবস্থানের আপেক্ষিক সুবিধা ও অসুবিধার উপর নির্ভরশীল । সাধারণভাবে বলা যায় , ব্যবসাবাণিজ্য সব শহরেরই কার্যাবলির অন্তর্গত । কিন্তু , ব্যাবসাবাণিজ্য ছাড়াও প্রতিটি শহরের কতকগুলি সুনির্দিষ্ট কার্যাবলি থাকে , যা তাদের প্রত্যেককে স্বীয় বৈশিষ্ট্য প্রদান করে । বিভিন্ন প্রকার মুখ্য কার্যাবলির ওপর নির্ভর করে , শহরের কর্মভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ করা হয় । যেমন

  1. প্রশাসনিক শহরঃ শাসনতান্ত্রিক কাজকর্মের সুবিধাযুক্ত স্থানে রাজধানী শহর , জেলা শহর , মহকুমা শহর ইত্যাদির সৃষ্টি হয় এবং এদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় , পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি হয় । বিদ্যুৎ , জল সরবরাহ ও টেলিযােগাযােগ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত হয় , এবং বিচারব্যবস্থা গড়ে ওঠে । 
  2. প্রতিরক্ষা – সংক্রান্ত শহরঃ প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কাজকর্মের ওপর নির্ভর করে অনেক শহর গড়ে ওঠে । প্রতিরক্ষা – সংক্রান্ত উপকরণ নির্মাণের কারখানা যেখানে গড়ে ওঠে , সেখানে সেনাবাহিনীর প্রয়ােজনে শিক্ষা ও সংস্কৃতি কেন্দ্র , উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা । গড়ে ওঠে । এইসব শহরে সেনাবাহিনীর থাকার ব্যবস্থা , প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা , বিমান – অবতরণ ক্ষেত্র , যুদ্ধ – জাহাজের জন্য পােতাশ্রয় ইত্যাদির সুবিধা থাকতে পারে । পাঁচমাড়ি ভারতের একটি উল্লেখযােগ্য প্রতিরক্ষা শহর ।
  3. সাংস্কৃতিক শহরঃ কোনাে কোনাে শহর সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের জন্য সমধিক পরিচিত হয় । যেমন — ইংল্যাণ্ডের কেমব্রিজ , ভারতের শান্তিনিকেতন বিশ্ববিখ্যাত । শিক্ষাভিত্তিক শহরগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ভবন এবং সংলগ্ন গ্রন্থাগার , খেলার মাঠ ছাড়াও ছাত্র – শিক্ষকদের প্রয়ােজনে রকমারি দোকানপাট , বিশেষত পুস্তক বিক্রয় কেন্দ্র , খেলাধুলার সরঞ্জাম , পােশাক – পরিচ্ছদের দোকান ইত্যাদি গড়ে ওঠে । 
  4. পণ্যদ্রব্য সংগ্রহ শহরঃ খনিজ – উত্তোলক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে , মৎস্য – আহরণকারী বন্দরের নিকটবর্তী অঞলে বা কাষ্ঠ সংগ্রাহক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে যে শহর গড়ে ওঠে , তাকে এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করা হয় । দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের স্বর্ণখনি অঞ্জলে , স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশগুলির ( নরওয়ে , সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ) বন্দর – সংলগ্ন অঞলে , কানাডা , আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশের কাষ্ঠ – সংগ্রাহক অঞলে এ – জাতীয় শহর গড়ে উঠতে দেখা যায় ।
  5. উৎপাদন শহরঃ যে সমস্ত শহরের কার্যাবলির মধ্যে যন্ত্রযােগে শিল্পজাত পণ্য উৎপাদন করা প্রধান কার্য , সেই সমস্ত শহরগুলি এই পর্যায়ভুক্ত । শিল্পবিপ্লবের সময় এই শহরগুলির সংখ্যা দ্রুতহারে বৃদ্ধি পায় । ইংল্যান্ডের ল্যাঙ্কাশায়ার– কার্পাসবস্ত্র – উৎপাদন কেন্দ্র হিসাবে বিখ্যাত । ভারতের জামশেদপুর ইস্পাত নগর নামে পরিচিত । 
  6. পণ্যসমূহের বণ্টন শহরঃ যে সকল শহরের মুখ্য কার্যাবলি হল পরিবহন এবং উৎপাদিত অথবা সংগৃহীত পণ্যসমূহের বণ্টন , সেই সমস্ত শহর এই পর্যায়ভুক্ত । টোকিও , নিউইয়র্ক , লন্ডন , কলকাতা , সিঙ্গাপুর , হংকং — এ জাতীয় শহরের উদাহরণ ।
  7. পর্যটন শহরঃ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে এ – জাতীয় শহর গড়ে ওঠে । এই সমস্ত শহরে আগত পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা , অত্যাধুনিক সুযােগ – সুবিধাযুক্ত হােটেল , বাজার ইত্যাদি সৃষ্টি হয় । কুলু , মানালি — এরকম শহরের উদাহরণ ।
  8. বসতি শহরঃ এমন অনেক শহর দেখা যায় , যে সমস্ত স্থানে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাসগৃহের পরিমাণ সর্বাধিক । সড়কপথ , রেলপথ এবং বাসগৃহের সংখ্যাই এ – জাতীয় শহরে বেশি ।
  9. ধর্মীয় শহরঃ ধর্মীয় কার্যকলাপের ওপর নির্ভর করেও বড়াে শহর গড়ে ওঠে । যেমন — হরিদ্বার , জেরুজালেম , মক্কা ইত্যাদি ।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। প্রশ্নের বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য অথবা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ(PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।