আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যে বিষয়টি ছাত্রছাত্রীরা অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় তারা খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্জন করতে পারবে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণে তামিলনাড়ুর অগ্রণী ভূমিকা এই বিষয়টি নিয়ে বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রে ব্যাবহার যোগ্য। নিম্নে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
বৃষ্টির জল সংরক্ষণে তামিলনাড়ুর অগ্রণী ভূমিকা লেখ?
বৃষ্টির জল সংরক্ষণে তামিলনাড়ু ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম । কিছু বছর আগে অবধিও তামিলনাড়ু রাজ্যে গ্রীষ্মকালে পানীয় জলের সংকট দেখা দিত । জনসাধারণের জলের মোট চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে জল উত্তোলনের ফলে ভৌমজলস্তর ভীষণভাবে হ্রাস পেত । পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জলেরও সঠিক যোগান হত না । এই পরিস্থিতিতে তামিলনাড়ু সরকার বৃষ্টির জল সংরক্ষণের উপরে জোর প্রদান করে । নিচে বৃষ্টির জল সংরক্ষণে তামিলনাড়ুর অগ্রণী ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করা হল –
উদ্দেশ্যঃ ২০০১ সালে তৎকালীন তামিলনাড়ু সরকার বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করে । এর দুটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল । যথা –
১. মহীশূর থেকে কাবেরী নদীর যে পরিমাণ জল অ্যাকুইডাক্ট ( Aqueduct ) – এর মাধ্যমে তামিলনাড়ুতে রপ্তানি হত তা রাজ্যের পক্ষে অপর্যাপ্ত ছিল, তাই পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করা ।
২. তামিলনাড়ুতে ভৌমজলস্তর আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা ।
গৃহীত ব্যবস্থাসমূহঃ সরকার বৃষ্টির জল সংরক্ষণে নানাবিধ ব্যবস্থা নিয়েছে । সরকার বৃষ্টির জল সংরক্ষণে নানাবিধ ব্যবস্থা নিয়েছে । এর মধ্যে
- বিশেষ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে প্রত্যেক গ্রামীণ এবং শহরাঞ্চলের বাড়িতে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক ঘােষণা করে এবং এই প্রকল্প প্রাথমিকভাবে দু – বছরের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শুরু করা হয় ।
- বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি সংগঠনের সাহায্যে জল সংরক্ষণের প্রচার শুরু হয় ।
- বৃষ্টির জল সংরক্ষণের জন্য নানা হাের্ডিং , ব্যানার , ফেস্টুন , ফ্লেক্সের সাহায্যে প্রচার চালানো শুরু হয় ।
- সরকারীভাবে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার চালানো হয় ।
- বৃষ্টির জল সংরক্ষণে সরকারী সহায়তা দেওয়া শুরু হয় ।
ফলাফলঃ ২০০৬ সালের সমীক্ষায় দেখা যায় যে , এর ফলে ভৌমজলস্তরের পরিমাণ প্রায় ৮৬,৭০০ কোটি ঘনফুট বৃদ্ধি পায় । এই অভাবনীয় সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে বিশেষ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নতুন করে প্রত্যেক বাড়ির ছাদ এবং নিকাশি ব্যবস্থাকে বৃষ্টির জল ধরে রাখার উপযুক্ত করে তােলার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয় । একই সঙ্গে গােটা দেশে বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ক্ষেত্রে তামিলনাড়ুকে “রোল – মডেল” ( Role – Model ) হিসেবে তুলে ধরা হয় । জলাভাব কাটিয়ে ওঠার লক্ষে সাধারণ মানুষের আন্তরিক যােগদানের ফলে ২০০৩ সালের মধ্যে দেখা যায় যে , তামিলনাড়ুর প্রায় ৪২ % শহরাঞ্চলের বাড়ি এবং ৩৬ % গ্রামীণ বাড়ি বৃষ্টির জল সংরক্ষণের উপযােগী হয়ে উঠেছে ।
পরবর্তীকালে রাজস্থানের থর এবং জয়পুর জেলাতে তামিলনাড়ুকে অনুসরণ করে অনুরূপ প্রকল্পের সরকারি সূচনা হয় । যেহেতু কলকাতা শহর সংলগ্ন ভৌমজলস্তরও এখন আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে এবং আর্সেনিক , অ্যান্টিমনিসহ নানা বিষাক্ত উপাদান জলের সঙ্গে মিশছে সেজন্য ২০১৩ সালে বর্তমান সরকার তামিলনাড়ুর অনুকরণে ‘ জল ধরাে , জল ভরাে ’ প্রকল্পের সূচনা করেছে ।
উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই নিচে প্রকাশ করুন এবং বিষয়টি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করুন। বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।