পেডিমেন্ট ও বাজাদা কি ?

0
পেডিমেন্ট ও বাজাদা কি ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমার ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে প্রশ্নটি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই প্রশ্নটি তারা অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্যন করতে পারবে। পেডিমেন্ট ও বাজাদা কি এই প্রশ্নটি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

Advertisement

পেডিমেন্ট ও বাজাদা কি ?

পেডিমেন্ট (Piedment):

সংজ্ঞাঃ 

মরু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহ ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে পাহাড়ের পাদদেশে গঠিত শিলাময়, মৃদু ঢালযুক্ত, প্রায় সমতল ভূমিকে পেডিমেন্ট (Piedmont) বলে । বাজাদা এর পরবর্তী অংশ । ‘Pedi’ শব্দের অর্থ ‘পাদদেশ’ ও ‘Mont’ শব্দের অর্থ ‘পাহাড়’ ।

উদাঃ

সাহারা মরুভূমিতে পাহাড়ের পাদদেশে পেডিমেন্ট দেখা যায় ।

উৎপত্তিঃ

পেডিমেন্টের উৎপত্তি সম্বন্ধে যথেষ্ট মতভেদ ( বিশেষতঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ) আছে । একদল বিজ্ঞানী এটি নদীর পার্শ্বক্ষয়ের ( Lateral Planation ) ফলে গঠিত হয়েছে বলে মনে করেন । পেডিমেন্টের উপরিভাগের অবতল ঢাল , উপরি অংশে ঢালের ছেদ বা নিক – এর অবস্থান এই মতবাদকে সমর্থন করে । অপর একদল বিজ্ঞানী মনে করেন , শুষ্ক এবং প্রায় – শুষ্ক অঞ্চলে ঢালের পশ্চাৎ অপসরণের ফলে পেডিমেন্ট গঠিত হয়েছে । আর্দ্র নাতিশীতােষ্ণ অঞ্চলের এবং শুষ্ক অঞ্চলের ক্ষয়কার্যের মধ্যে পার্থক্য হল এই যে , আর্দ্র অঞ্চলে বহুদিন ধরে ক্ষয়কার্যের ফলে যে সময় ভূমির সৃষ্টি হয় তার ঢাল ক্রমশ কমতে থাকে । কিন্তু শুষ্ক অঞ্চলে পর্বতের সম্মুখভাগে যে খাড়া ঢাল ( প্রায় ৩০ °) থাকে তার সাথে পেডিমেন্টের ঢালের ( ৬ ° হইতে ৭ ° ) যে পার্থক্য তা আবহবিকার ও নগ্নীভবনের ক্ষয়কার্যের ফলেও প্রায় একই থেকে যায় । একে ঢালের সমান্তরালভাবে পশ্চাৎ অপসরণ বলে । আফ্রিকায় ভূ – বিজ্ঞানিগণ একে ভৃগুতট পশ্চাৎ অপসরণ বলে থাকেন ।

শ্রেণীবিভাগঃ 

পেডিমেন্ট মূলত তিন প্রকার । যথা

  1. লুক্কায়িত পেডিমেন্টঃ পেডিমেন্টের উপরিভাগ অনেক সময় হালকা পলির আবরণে ঢাকা থাকে । তখন একে লুক্কায়িত পেডিমেন্ট ( Concealed Pedirnent ) বলে ।
  2. সমবেত পেডিমেন্টঃ পার্বত্য উপত্যকা পেডিমেন্টের ঢালে এসে যেখানে মিলিত হয় সেখানে পেডিমেন্ট প্রসারিত হয়ে অনেক সময় একটি অপরটির সাথে মিলিত হয় । একে সমবেত পেডিমেন্ট ( Coalescing Pediments ) বলা হয় ।
  3. ব্যবচ্ছিন্ন পেডিমেন্টঃ অনেক সময় পেডিমেন্ট জলধারার দ্বারা ব্যবচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে , তখন তাহাকে ব্যবচ্ছিন্ন পেডিমেন্ট ( Dissected Pediments ) বলে ।

বৈশিষ্ট্যঃ

পেডিমেন্ট – এর বৈশিষ্ট্যগুলি হলো নিম্নরূপ

  1. পেডিমেন্টের উপরের দিকের ঢাল ৭° ও নিচের দিকের ঢাল ১° / ২° এর মত হয় । কিন্তু পর্বতের সম্মুখে যেখানে পেডিমেন্টের ঢাল পর্বতগাত্রে মিলিত হয় সেখানে ঢালের পরিমাণ ১৫ ডিগ্রী হইতে প্রায় খাড়া অবস্থায় থাকে ।
  2. এটি ছোট-বড় প্রস্তরখন্ড, নুড়ি, কাঁকর প্রভৃতি দ্বারা গঠিত হয় ।
  3. যেখানে পেডিমেন্ট পর্বতগাত্রে মিলিত হয় সেখানে ঢালের মধ্যে একটি ছেদ বা নিক ( Nick ) -এর সৃষ্টি হয় ।
  4. পেডিমেন্টের উপরিভাগ প্রায় সমতল বা কিছুটা অসমতল ( Concave ) হয় ।

বাজাদা (Bajada)

সংজ্ঞাঃ 

পেডিমেন্টের নিচের অংশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলধারা বাহিত হয়ে সুক্ষ্ম বালি, পলি প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে যে প্রায় সমভূমির ন্যায় ভুমিরূপ সৃষ্টি হয়, তাকে বাজাদা (Bajada) বলে । ‘Bajada’ শব্দটি একটি স্প্যানিশ শব্দ ‘Bahada’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘পাশাপাশি সৃষ্ট একাধিক পলি শংকুগঠিত সমভূমি’ ।

উদাঃ

সাহারা মরুভূমিতে পাহাড়ের পাদদেশে পেডিমেন্টের সাথে বাজাদা দেখা যায় ।

বৈশিষ্ট্যঃ

বাজাদা – র বৈশিষ্ট্যগুলি হলো নিম্নরূপ

  1. এটি পেডিমেন্টের পরবর্তী অংশ ।
  2. এর ঢাল অত্যন্ত কম (১/২° – ১°) ।
  3. অপেক্ষাকৃত সুক্ষ্ম বালি, পলি প্রভৃতি দ্বারা বাজাদা গঠিত হয় ।
  4. প্রকৃত বাজাদা জলধারা বা নদীবাহিত বালু ও পলি সঞ্চয়ের ফলে সৃষ্ট পাখার ন্যায় দেখিতে কয়েকটি পলি – গঠিত ভূ – ভাগের সংযুক্তির ফলে  গড়ে উঠে ।
  5. বাজাদার উপরিভাগ ঈষৎ তরঙ্গায়িত হয়ে থাকে ।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি আপনার ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের কাছেও শেয়ার করতে ভুলবেন না। প্রশ্নটি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।