ধান চাষের অনুকূল ভৌগােলিক পরিবেশ গুলি কি কি ?

0
ধান চাষের অনুকূল ভৌগােলিক পরিবেশ লেখ ?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই, আজ আমরা ভূগোলের একটি গুরত্বপূর্ন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করবো যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা এই বিষয়টি ভালো ভাবে অধ্যায়ন করলে খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্যন করতে পারবে। ধান চাষের অনুকূল ভৌগােলিক পরিবেশ বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

ধান চাষের অনুকূল ভৌগােলিক পরিবেশ লেখ ?

পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষের খাদ্যশস্য হল ধান । ধান মৌসুমী অঞ্চলের ফসল বলে ধানের চাষ দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এর বাইরে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে খুব সামান্য ধানই জন্মে থাকে। ধান চাষের অনুকূল ভৌগােলিক পরিবেশগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় – প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক পরিবেশ। নিচে এদের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল

প্রাকৃতিক পরিবেশঃ

  1. জলবায়ুঃ ধান ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের ফসল , তাই ধান চাষে প্রচুর উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের প্রয়ােজন হয়। (a)উষ্ণতাঃ ধান চাষের জন্য উপযােগী উষ্ণতা হল গড়ে ১৭০ সেলসিয়াস থেকে ২৭০ সেলসিয়াস। তবে অধিক উষ্ণতায় ধান দ্রুত পাকে । (b)বৃষ্টিপাতঃ ধান চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রয়ােজন হয়। গড়ে ১০০ সে.মি. থেকে ২০০ সে.মি. বৃষ্টিপাত ধানচাষের পক্ষে উপযুক্ত। বৃষ্টিপাত কম হলে জলসেচ করতে হয় । ধানের চারা যখন বড় হয় তখন বেশি বৃষ্টিপাত হলে ধান পুষ্ট হয় কিন্তু ধান পাকার সময় বৃষ্টিপাত হলে শস্যহানির আশঙ্কা থাকে।
  2. মৃত্তিকাঃ উর্বর মৃত্তিকা ধান চাষের জন্য উপযােগী। তবে উপযুক্ত উষ্ণতা, সার ও জলের সরবরাহ থাকলে যে কোনাে মাটিতে ধান চাষ হয়। নদী অববাহিকা ও ব – দ্বীপ অঞ্চলের উর্বর পলিমাটিতে ধান সবচেয়ে ভাল জন্মায়। কাদাযুক্ত দো – আঁশ মাটিতে ধান চাষ ভাল হয় কারণ এই মাটিতে ধানের শিকড় প্রবেশ করতে পারে এবং এইরকম মাটির জলধারণের ক্ষমতা বেশি।
  3. ভূমিরূপঃ ধান চাষের প্রথম পর্যায়ে চারাগাছের গােড়ায় জল দাঁড়িয়ে থাকা বাঞ্ছনীয়। সেক্ষেত্রে সমতল জমি হওয়া আবশ্যক, যেখানে বাঁধ দিয়ে জল ধরে রাখা সুবিধাজনক। তবে পার্বত্য অঞ্চলেও ধান চাষ করা হয় – ধাপ কেটে জমি সমতল করে। পৃথিবীর অধিকাংশ ধানজমি নদী অববাহিকার প্লাবনভূমি ও ব – দ্বীপ অঞ্চলের জলাভূমিগুলিতে অবস্থান করছে। 

অর্থনৈতিক পরিবেশঃ

  1. শ্রমিকঃ ধান চাষে যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত । ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করা, আগাছা পরিষ্কার করা, বীজ বপন ও চারা রােপণ করা, শস্য সংগ্রহ করা ইত্যাদির জন্য প্রচুর দক্ষ ও সুলভ শ্রমিক প্রয়ােজন। ঘনবসতিপূর্ণ মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলে শ্রমিকের প্রাচুর্য ধান চাষকে উন্নতিলাভ করতে সাহায্য করেছে।
  2. পরিবহনঃ উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক, রাসায়নিক সার, কৃষিযন্ত্রপাতি ইত্যাদি সংগ্রহ বা ফসল (উদ্বৃত্ত) বাজারে পাঠানাে ইত্যাদির জন্য প্রয়ােজনীয় উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা থাকলে চাষীদের সুবিধা হয়।
  3. চাহিদাঃ ধান মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলের প্রধান খাদ্যশস্য বলে এর অন্তর্গত সমস্ত অঞ্চলেই ধানের চাহিদা বেশি। ফলে এই অঞ্চলে ধানের চাষ প্রাধান্য পায়।
  4. মূলধনঃ নিবিড় পদ্ধতিতে ধানের উৎপাদন বাড়ানাের জন্য কৃষি – যন্ত্রপাতির ব্যবহার কম হলেও উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক, রাসায়নিক সার এবং শ্রমিকের মজুরি ও পরিবহন প্রভৃতির জন্য যথেষ্ট মূলধনের প্রয়ােজন হয়ে থাকে।

উপরোক্ত অংশ নিয়ে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি আপনার কোনো সাহায্য হলে আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে তাদের কেও সাহায্য করুন। প্রশ্নটি নিজের কাছে সংরক্ষিত করার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।