অ্যানাবেটিক বায়ু ও ক্যাটাবেটিক বায়ু কি?

2
অ্যানাবেটিক বায়ু ও ক্যাটাবেটিক বায়ু কি?

আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই আজ আমরা অধ্যায়ন করবো ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে যে বিষয়টি পরীক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কাছে খুবই উপকারী। এই বিষয়টি ছাত্রছাত্রীরা অধ্যায়ন করলে পরীক্ষায় খুব সহজেই ভালো নম্বর অর্যন করতে পারবে তাই তাদের কাছে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অ্যানাবেটিক বায়ু ও ক্যাটাবেটিক বায়ু কি এই বিষয়টি নিয়ে নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

Advertisement

অ্যানাবেটিক বায়ু ও ক্যাটাবেটিক বায়ু কি?

অ্যানাবেটিক বায়ু (Anabatic Wind):

ব্যুৎপত্তিগত অর্থঃ

‘Anabatic’ – শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ ‘Anabaino’ থেকে, যার অর্থ হলো ঊর্দ্ধগামী

সংজ্ঞাঃ 

দিনের বেলা সূর্যকিরণের প্রভাবে পর্বতের মধ্যভাগের তুলনায় উর্দ্ধভাগ ও উপত্যকার তলদেশ অপেক্ষাকৃত বেশী উত্তপ্ত হয়ে পড়ে । যার ফলে সংশ্লিষ্ট বায়ুস্তরও উত্তপ্ত ও হালকা হয়ে পর্বতের গা বেয়ে এবং উপত্যকার উজান বরাবর উপরের দিকে প্রবাহিত হয় । উপত্যকার উজান বরাবর প্রবাহিত ঊর্দ্ধগামী বায়ুকে উপত্যকা বায়ু (Valley Wind) ও পর্বতের ঢাল বরাবর উপরের দিকে প্রবাহিত বায়ুকে ঊর্দ্ধঢাল বায়ু (Upslope Wind) বলে । এই ঊর্দ্ধঢাল বায়ুরই অপর নাম অ্যানাবেটিক বায়ু (Anabatic Wind)।

উদাঃ 

ভারতের হিমাচল প্রদেশের কুলু ও কাংড়া উপত্যকায় দিনের বেলা এইপ্রকার বায়ু প্রবাহিত হয় ।

বৈশিষ্ট্যঃ

অ্যানাবেটিক বায়ু – র বৈশিষ্ট্যগুলি হলো নিম্নরূপ –

  1. সূর্য ওঠার কিছু পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এইপ্রকার বায়ুপ্রবাহ চলতে থাকে । তবে এইপ্রকার বায়ুর গতিবেগ সবথেকে বেশী হয় দুপুরের কিছু সময় পর ।
  2. এইপ্রকার বায়ু মূলত পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির বন্ধুরতার জন্য সৃষ্টি হয়ে থাকে ।
  3. ঊর্দ্ধমুখী এই বায়ুপ্রবাহ পর্বতচূড়ার কিছু উপরে উঠে কিছুকাল অবস্থানের পর বিপরীত উপত্যকা বায়ু (Anti-valley Wind) হিসাবে ফিরে আসে ।
  4. পার্বত্য অঞ্চলে এভাবে প্রতিদিনই দিনের বেলায় এইপ্রকার বায়ু সৃষ্টি হয়ে থাকে, তবে দুর্যোগপূর্ণ বায়বীয় গোলযোগের সময় (যেমন – ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত) এইপ্রকার বায়ুর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয় ।

প্রভাবঃ

অ্যানাবেটিক বায়ুর প্রভাবে পার্বত্য অঞ্চলের ঊর্দ্ধভাগ অপেক্ষাকৃত উষ্ণ থাকে, যার ফলে আবহাওয়াও অপেক্ষাকৃত মনোরম ও আরামদায়ক থাকে । স্বাভাবিকভাবেই তাই  এইপ্রকার বায়ু প্রভাবিত পর্বতের ঊর্দ্ধভাগে জনবসতি অপেক্ষাকৃত বেশী হয় ।

ক্যাটাবেটিক বায়ু (Katabatic Wind):

ব্যুৎপত্তিগত অর্থঃ

‘Katabatic’ – শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ ‘Katabaino’ থেকে, যার অর্থ হল নিম্নগামী

সংজ্ঞাঃ

রাতের বেলা বিকিরণের ফলে পর্বতের গা এবং উপত্যকা শীতল হয়ে পড়ে । শীতল ভূমির সংস্পর্শে এসে ভূমি সংলগ্ন বায়ুও শীতল হয় । ফলে এই শীতল ও ভারী বায়ু পর্বতের গা ও উপত্যকা বেয়ে নীচের দিকে নেমে আসে । রাতের বেলা উপত্যকা বেয়ে নিম্নগামী এই বায়ুপ্রবাহকে পার্বত্য বায়ু (Mountain Wind) ও পর্বতের গা বেয়ে নীচের দিকে প্রবাহিত বায়ুকে ক্যাটাবেটিক বায়ু (Katabatic Wind) বলে ।

উদাঃ

ভারতের হিমাচল প্রদেশের কুলু ও কাংড়া উপত্যকায় রাতের বেলা এইপ্রকার বায়ু প্রবাহিত হয় ।

বৈশিষ্ট্যঃ

ক্যাটাবেটিক বায়ু – র বৈশিষ্ট্যগুলি হলো নিম্নরূপ –

  1. সূর্যাস্তের কিছু পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত এইপ্রকার বায়ুপ্রবাহ চলতে থাকে । তবে এইপ্রকার বায়ুর গতিবেগ সবথেকে বেশী হয় শেষ রাতে ।
  2. এইপ্রকার বায়ু মূলত পার্বত্য অঞ্চলে ভূমির বন্ধুরতার জন্য সৃষ্টি হয়ে থাকে ।
  3. পার্বত্য অঞ্চলে এভাবে প্রতিদিনই রাতের বেলায় এইপ্রকার বায়ু সৃষ্টি হয়ে থাকে, তবে দুর্যোগপূর্ণ বায়বীয় গোলযোগের সময় (যেমন – ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত) এইপ্রকার বায়ুর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয় ।

প্রভাবঃ

ক্যাটাবেটিক বায়ুর প্রভাবে পার্বত্য অঞ্চলের নিম্নভাগ অপেক্ষাকৃত শীতল হয়ে পড়ে, যার ফলে আবহাওয়াও রুক্ষ ও কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে এবং রাত বাড়ার সাথে সাথে যার তীব্রতাও ক্রমশ বাড়তে থাকে । স্বাভাবিকভাবেই তাই এইপ্রকার বায়ু প্রভাবিত পর্বতের নিম্নভাগে জনবসতি অপেক্ষাকৃত কম হয় ।

উপরোক্ত অংশ থেকে কোনো বিস্ময় থাকলে অবশ্যই নিচে মন্তব্য করুন এবং প্রশ্নের বিষয়টি আপনার কোনো সাহায্যপ্রাপ্ত হলে আপনার বন্ধুদের কাছেও প্রশ্নের বিষয়টি শেয়ার করুন। বিষয়টি পরে অধ্যায়ন করার জন্য বা নিজের কাছে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য সরাসরি পিডিএফ (PDF) ফাইল ডাউনলোড করুন ধন্যবাদ।

2 COMMENTS

Comments are closed.